বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক সমঝোতা হলে সব ভোট ব্যালটে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক সমঝোতা হলে সব ভোট ব্যালটে

কাজী হাবিবুল আউয়াল

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোট গ্রহণের চেয়েও দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আরও ‘বড় সংকট’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, সংকটগুলো কেটে যাক। সংকট কেটে গিয়ে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ফয়সালা হয়, সব ভোট ব্যালটে হবে। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব, সব দল যখন নির্বাচনে আসছে, তাহলে সেটা ভালো উদ্যোগ।

গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, আমাদের জন্য যেটা প্রয়োজন, ইভিএমে ভোট করলাম কী করলাম না, সেটা নয়; নির্বাচনটা সঠিক, অবাধ, নির্বিঘ্ন হলো কি না-সেটা ইভিএমে হোক, ব্যালটে হোক, সেটা হওয়াটা বড় কথা। কাজেই বড় ধরনের সংকট ওখানে নয়। ওই সংকট নিরসন হলে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে উঠে আসবে।

হাবিবুল আউয়ালের নির্বাচন কমিশন গত ২৩ আগস্ট এক বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে এর পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক ‘ঐকমত্য ছাড়া’ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে এ অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ৩৯ নাগরিক। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ইভিএমের ফলাফল নিয়েও ‘কারসাজি’ করা যায়। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত কারিগরি টিমও নির্বাচনী ফল ‘বদলে দিতে পারে’। আমরা মনে করি, কমিশনের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। এটি রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও উসকে দেবে এবং কমিশনের বর্তমান আস্থার সংকটকে আরও প্রকট করে তুলবে। তবে ইভিএম নিয়ে কোনোভাবেই রাজনৈতিক সংকট ‘প্রকট হবে না’ বলে মনে করছেন সিইসি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংকট হতে পারে- এটা আমি জানি না। ইভিএম নিয়ে যদি কোনো রাজনৈতিক সংকট হয়, সংকট মোকাবিলার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা ইভিএম নিয়ে কোনো সংকট দেখছি না। সিইসির ভাষ্য, আমরা বরং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যে সংকটগুলো দেখছি, সেই সংকটটা ইভিএম নিয়ে নয়, আরও মোটা দাগের সংকট। আমরা আশা করি, দোয়া করি, এ সংকটগুলো কেটে যাক। সংকট কেটে গিয়ে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ফয়সালা হয় সব ভোট ব্যালটে হবে, হানড্রেড পার্সেন্ট সমঝোতায় হয়, অসুবিধা কী। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব, সব দল যখন নির্বাচনে আসছে, তাহলে সেটা ভালো উদ্যোগ।

নির্বাচন কমিশন গত কয়েক বছরে ‘হাজার হাজার নির্বাচনে হাজার হাজার ইভিএম’ ব্যবহার করেছে মন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘আমাদের যন্ত্রে ম্যালফাংশন করেছে- এমনটি ঘটেনি।’ তিনি বলেন, সব দলকে প্রযুক্তিবিদ নিয়ে এসে যাচাই করে দেখতে বলেছি। আমরাও ওদের কথা আমলে নিয়ে পরীক্ষা করেছি। বাজারে যে কথা চালু রয়েছে, ডিজিটাল জালিয়াতির পক্ষে আমরা কোনো প্রমাণ পাইনি।

ইভিএম নিয়ে আর্থিক সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, একটা সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার এটা লাগবে, সরকার যদি বলে পয়সা দিতে পারবে না, আমরা তো জোরাজুরি করব না দেশের মানুষকে আর্থিক সংকটে ফেলে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৫০টি ইভিএমে করার, আর ১৫০টি আসনে ব্যালটে ভোট করার; কোনো পরিবর্তন করতে হলে আমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর