শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী

অনির্বাচিত সরকারের স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনির্বাচিত সরকারের স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের স্বপ্ন যারা দেখছেন, সে স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসুন দয়া করে। অনির্বাচিত সরকার আর ফিরে আসবে না’। তিনি জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সংবিধান বাদ দিয়ে যারা অনির্বাচিত সরকার আনতে চায়, তারা কি বাংলাদেশের সংবিধানে বিশ্বাস করে, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে?।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী বৈঠকে গতকাল তিনি এসব কথা বলেন।

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার হচ্ছে, আতঙ্কের নাম। যারা অনির্বাচিত সরকারের কথা বলছে তারা দেশ ও জনগণকে আতঙ্কের মধ্যে ফিরিয়ে নিতে চায়। অনির্বাচিত সরকার জনগণ মেনে নেবে না। অনির্বাচিত সরকার ফিরে আসবে না। সরকারে যেতে চাইলে নির্বাচনে আসুন। এ জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করুন।’ সংসদ নেতা আরও বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের ওপর ভর করে যাদের ক্ষমতায় আসার ইচ্ছা তাদের বলব, রাজনীতি করেন জনগণের। জনগণের কাছে যান, নির্বাচন করেন, জনগণের ভোট নেন, ক্ষমতায় আসেন। কোনো আপত্তি নেই। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। এটাই বাস্তবতা।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু কিছু লোক বলে যাচ্ছে যে, দুই-তিন বছর অনির্বাচিত সরকার থাকলে ক্ষতিটা কী? এতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে?’ তিনি প্রশ্নন রেখে বলেন, এটি কোন ধরনের কথা? আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার আসবে, যার জন্য আমাদের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, জেল-জুলুম অত্যাচার পর্যন্ত সহ্য করা। সেই গণতন্ত্র যখন ফিরিয়ে এনেছি, অব্যাহতভাবে গণতন্ত্র আছে বলেই আজ দেশের উন্নতিটা মানুষের কাছে দৃশ্যমান।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। এখানে নাকি অনির্বাচিত সরকার আনতে হবে। আমার প্রশ্ন, এই যে ছয়টি উপনির্বাচন, এই নির্বাচন সম্পর্কে কেউ তো একটি কথাও বলতে পারেনি। বাংলাদেশের একজন মানুষও কি এই নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে পেরেছে? তুলতে পারেনি। তবে কিছু লোক আছে, তাদের সব সময় উল্টো কথা বলতেই হবে।’ আওয়ামী লীগ সরকার ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন যে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, সেটা তো আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি। রংপুরের মেয়র নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন। এখানে (সংসদে) উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসা ছয়জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখেছেন। এই উপনির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যে স্বচ্ছ হয়েছে, অবাধ নিরপেক্ষ হয়েছে, এটা কি প্রমাণ করে না যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে (থাকলেও) নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন, নিরপেক্ষভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সক্ষমতা রাখে? সেখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, করেও না, করবেও না। আগামীতেও কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলার বা সমালোচনার সুযোগ পাবে না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই তো আমাদের আন্দোলন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। সেই সংগ্রামের সাফল্য বয়ে এনে আজকে ভাতের অধিকার যেমন আমরা নিশ্চিত করেছি, ভোটের অধিকারও আমরা নিশ্চিত করেছি। এটিই বাস্তব।’ টেলিফোনে আড়ি পাতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেলিফোনে আড়ি পাতা নিয়ে কেউ কেউ কথা বলছেন। কিন্তু আড়ি পাতা ছাড়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করা হবে কীভাবে? আড়ি পাতার মাধ্যমেই জানা সম্ভব, কারা ষড়যন্ত্র করছে, সন্ত্রাস সৃষ্টি ও জঙ্গি তৎপরতার পরিকল্পনা করছে। তাই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু (আড়ি পাতা) করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটা আইনসিদ্ধ।’

সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই উন্নয়ন দৃশ্যমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসে আমরা মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন ও অভুক্ত থাকবে না। সে লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করার কাজ চলছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাব। যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব আমরা।

 

 

সর্বশেষ খবর