ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, গণগ্রেপ্তার মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করছে। এজন্য গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে এবং কেবল সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তবেই গ্রেপ্তার করা যেতে পারে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। রাশেদ খান মেনন বলেন, ছাত্রদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরে যেতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমলা বা গোয়েন্দা দিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাবে না। ডিবি অফিসে নিয়ে যে দৃশ্য মঞ্চায়িত করা হয়েছে তা কেবল দৃষ্টিকটুই নয়, বরং তা জনগণের মধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি করেছে। এসব কর্মকাণ্ড জনগণের মধ্যে কোনো আস্থাবোধ তৈরি করতে পারবে না। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, সব সংকটেই রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়ে জনজীবনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। ১৪ দলের বৈঠকে আলোচনার বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, সর্বসম্মতভাবেই জামায়াত-শিবিরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেননা তারা অতীতের মতো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তারা রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হয়। তার পর থেকে এযাবৎ যেসব কর্মকাণ্ড তারা করেছে তা স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। জামায়াত-শিবিরকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধের বিষয়টি যৌক্তিক। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালও তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে সাব্যস্ত করেছিল এবং তাদের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিলের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছিল। তিনি আরও বলেন, এবারে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চেপে বসে সরকারের সব অর্জন এবং সক্ষমতার প্রতীকগুলোতে চরমভাবে আঘাত করেছে এ গোষ্ঠী। রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলো ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। আমরা মনে করি, সময় এসেছে তাদের সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিকভাবে বিতাড়িত করার। এ স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ থাকবে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্য, সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার ভূমিকা রাখতে হবে।