নতুন করে ভারতে হামলার ছক কষছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি। তাদের নজরে রয়েছে আফগানিস্তানও। বৃহস্পতিবার সন্ত্রাস নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালীন সেনেট নির্বাচন কমিটিকে এ কথা জানান মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ড্যানিয়েল কোটস। ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির জন্য ইসলামাবাদকেই দায়ী করেছেন তিনি।
কোটস বলেন, ‘দেশের মাটি থেকে জঙ্গি ও কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীদের উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে ইসলামাবাদ। জঙ্গি দমনে বরাবরই এমন গাছাড়া মনোভাব তাদের। যে কারণে ভারত ও আফগানিস্তানের মতো প্রতিবেশি দেশগুলিকে কঠিন মূল্য চোকাতে হচ্ছে। ক্রমাগত সেখানে হামলার ছক কষে চলেছে জঙ্গিরা। এদিকে ভারত বিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের আজও সমর্থন জুগিয়ে চলেছে ইসলামাবাদ। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তা বন্ধ করতে পারেনি পাকিস্তান সরকার। ২০১৬ সালে সীমান্ত পেরিয়ে দু’বার ভারতে হামলা চালিয়েছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা বেড়েছে। হালার পর এতদিন কেটে গেলেও, পাঠানকোট হামলার তদন্ত সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে কোনও উদ্যোগই নিচ্ছে না ইসলামাবাদ। জঙ্গি দমনে তাদের এমন অনীহা মেনে নিতে পারছে না দিল্লি। যে কারণে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। সীমান্ত পেরিয়ে এ বছর আর কোনও হামলা হলে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।’ আফগানিস্তান সহ দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন ড্যানিয়েল।
গোয়েন্দাসূত্রে প্রাপ্ত তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ‘২০১৮ সালে আফগানিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য সহযোগী রাষ্ট্রগুলি সেনা জোগালেও, সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। দেশের দুর্বল অর্থনীতিই আফগানিস্তানের পতনের জন্য দায়ী থাকবে। যতদিন পর্যন্ত সন্ত্রাস নির্মূল না হচ্ছে এবং তালেবানদের সঙ্গে সন্ধি স্থাপন না হচ্ছে, ততদিন এই সংঘর্ষ চলতে থাকবে। তবে আমাদের ধারণা, ততদিনে গ্রামীণ এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে ফেলবে তালেবানরা। তাদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান, যুদ্ধে প্রাণহানি, সাজ–সরঞ্জামের অভাব এবং দুর্বল নেতৃত্বের জেরে আফগান বাহিনী বেকায়দায় পড়বে।’ অদূর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হলেও, পাকিস্তান ও চীন— দুই পড়শি দেশ যে দিল্লির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন ড্যানিয়েল কোটস। দাবি করেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের জনপ্রিয়তায় এমনিতেই যথেষ্ট উদ্বেগে ইসলামাবাদ। একঘরে হওয়ার আতঙ্কে ভুগছে তারা। অদূর ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত হলে পুরোপুরি চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে তারা। এতে অবশ্য বেইজিংয়েরই লাভ। পাকিস্তানের সাহায্যে ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তারে আরও সচেষ্ট হবে তারা।’ তবে চীনের হাত ধরলেও, ২০১৮ নাগাদ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে নিজেদের রিপোর্টে জানিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ