রাজধানীর পল্লবীতে রাকিবুল ইসলাম সানি ওরফে পেপার সানি নামে এক যুবকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে মিরপুর-১১ নম্বরের বি-ব্লকের ৩ নম্বর লাইনের মিল্লাত ক্যাম্পসংলগ্ন ডায়মন্ড স্কুলের সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম জানান, ঘটনাস্থল মিল্লাত ক্যাম্প থেকে নিহত সানির লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল করা হয়। নিহত যুবক শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরিহিত ছিল। পা ছিল গামছায় বাঁধা। গলা ছিল কাটা ও রক্তাক্ত। পরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। নিহত সানির বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মাদকসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। মাদক নিয়ে দ্বন্দ্ব না কি অন্য কোনো কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জানা গেছে, পেপার সানি পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং লিডার। গত বছর ১৬ মার্চ এলাকায় মাদক ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাব্বি গ্রুপের হামলায় পেপার সানি গ্রুপের ফয়সাল নিহত হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের ধারণা, আধিপত্য নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন সানিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ সময় লাশের দুই হাতে হ্যান্ডকাপ ছিল। সানি পল্লবীর ১২ নম্বর মোড়াপাড়া ক্যাম্পের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা বলছেন, সোমবার রাতে মিরপুর ১২ নম্বর মোড়াপাড়া ক্যাম্প থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পেপার সানিকে তুলে নিয়ে যায়। সকালে তার লাশ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে রাতভর গাড়িতে নির্যাতন করে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে। এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সানিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণকারীরাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। ওই গাড়িতে আগে থেকেই চিহ্নিত মাদক কারবারি ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি ল্যাংড়া রুবেলসহ তার সহযোগীরা ছিল বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নিহত সানি অটোরিকশা চালাতেন। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা গত রমজান মাসেও তার ওপর হামলা চালিয়েছিল। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় সানিকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি জিন্দাসহ আরও বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাকছেদুর রহমান বলেন, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। আমরা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কিছু নাম পেয়েছি। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।