চব্বিশের ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করে ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ একটি খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। ২৬ দফা সংবলিত এ ঘোষণাপত্রের খসড়ার ২৫ নম্বর দফায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র গণ অভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। বিশেষত সংবিধানের প্রস্তাবনায় এর উল্লেখ থাকবে এবং তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সংযুক্ত থাকবে।’ সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এ ঘোষণাপত্রের খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই জাতীয় সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র দুটি ভিন্ন বিষয়। জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র। জুলাই সনদের মতোই এ ঘোষণাপত্র নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চাইছে সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে জুলাই ঘোষণাপত্রের স্বীকৃতি ও কার্যকারিতা। একই সঙ্গে সাংবিধানিক স্বীকৃতিও চাইছে দলটি। তবে জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্তের বিষয়ে একমত নয় বিএনপি। এ পরিস্থিতিতে ঘোষণাপত্রের যে খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে তাতে এনসিপির দাবি অনুযায়ী চব্বিশের অভ্যুত্থানের সাংবিধানিক স্বীকৃতির অঙ্গীকারের বিষয়টি ২৫ নম্বর দফায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২৬ নম্বর ও সর্বশেষ দফায় বলা হয়েছে, এ ঘোষণাপত্র ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেওয়া হবে। সূত্র জানায়, সংস্কার প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদের খসড়া দলগুলোকে পাঠানোর পরদিন মঙ্গলবার ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ খসড়া মতামত নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হয়। জুলাই ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধানের পদ্ধতি ও কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের ফলে স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ রয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাকশালের নামে সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম এবং ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে। ঘোষণাপত্রে ২০০৭ সালের ১/১১ এর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ১/১১ এর ষড়যন্ত্রমূলক বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করা হয়। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে এ দেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করে।