কক্সবাজারে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় উত্তেজিত দর্শকদের স্টেডিয়াম ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর ও তান্ডব চালানোর ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া দুইজন ইজারাদারসহ ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জেলা ক্রীড়া অফিসার আলাউদ্দিন বাদী হয়ে রবিবার ইজারাদার ইব্রাহিম বাবু ও শাফায়েত মুন্নাকে প্রধান আাসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা দুটি করেছেন।
এর আগে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শহরের ‘বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম’ পরিদর্শন পরিদর্শন করেন। মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি কাজ করবে হামলা ভাঙচুরের বিষয়ে আর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আরেকটি কমিটি কাজ করবে অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি ও কালোবাজারির বিষয়ে।
তিনি বলেন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকালে স্টেডিয়ামে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। উত্তেজিত দর্শকরা ভাঙচুরের পাশাপাশি যে তান্ডব চালিয়েছে, তার কারণ দ্রুত তদন্ত করে বের করবে কমিটি। পাশাপাশি ঘটনায় ক্ষতক্ষতি নিরূপণে গণপূর্ত বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক সালাহ্উদ্দিন।
এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীন বলেন, এ ঘটনায় জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা স্টেডিয়াম ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্তসাপেক্ষে মামলা নথিভুক্ত করা হবে। ধারণ ক্ষমতার বেশি দর্শক স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছিল এবং অনেকে টিকেট সংগ্রহ করেও ভিতরে ঢুকতে না পারায় দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে এই তান্ডব চালিয়েছে বলে মনে করেন পুলিশ সুপার।
দর্শকদের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা কম ছিল জানিয়ে সাইফউদ্দীন শাহীন বলেন, পুলিশসহ অন্য বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ফলে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি এবং বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো গেছে।
কক্সবাজার বীর শ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ছিল শুক্রবার। রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে বেলা ৩টায় ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে খেলা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বেলা ১১ থেকে গ্যালারিতে প্রবেশ করেন দর্শকরা। দুপুর ২টার মধ্যেই ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত দর্শক প্রবেশ করে গ্যালারিতে। এক পর্যায়ে উত্তেজিত দর্শকরা প্রবেশ গেইট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে পুরো মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এতে মাঠে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও লাঠিপেটা করে। এতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন, একাধিক পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান।
বিডি প্রতিদিন/এএম