এখনো বেশ কয়েক দিন বাকি। ১৮ নভেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। জাতীয় স্টেডিয়ামে নিয়মিতই অনুশীলন করে যাচ্ছেন জামাল ভূঁইয়ারা। দলের সবাই এখনো ক্যাম্পে যোগ হয়নি। আসেননি স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরাও। প্রধান আকর্ষণ হামজা দেওয়ান চৌধুরীর আসার কথা রয়েছে ১০ নভেম্বর। সামিত সোম কানাডা থেকে আরও এক দিন পরে আসতে পারেন। অনুশীলনের শুরুতেই অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া হুঙ্কার দিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা জিততেই হবে।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলই বিদায় নিয়েছে। চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করার কোনো সুযোগই নেই দুই দলের। ‘সি’ গ্রুপ থেকে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করার জন্য লড়াই করছে হংকং ও সিঙ্গাপুর। চার ম্যাচে ৮ পয়েন্ট করে সংগ্রহ করেছে দুই দলই। তবে প্রতিপক্ষের জালে গোল বেশি দেওয়ার হিসাবে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে আছে হংকং। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলই ২ পয়েন্ট করে সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশ তিনে ও ভারত চার নম্বরে অবস্থান করছে। বাছাইপর্ব থেকে বড় কিছু অর্জনের সুযোগ নেই এ দুই দলের। তবে প্রতিবেশী দুই দলের ফুটবলীয় লড়াই হয়ে উঠেছে মর্যাদার। গত মার্চে শিলংয়ে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ড্র করে দুই দল। হামজাদের খেলা দেখে মুগ্ধ হয় ভারতীয় দর্শকরা। এবার ঘরের মাঠে ভারতকে হারিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার মিশনে নামবেন জামাল ভূঁইয়ারা।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে। ৯ নভেম্বর থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে ভারতীয় প্রতিনিধিদল ভেন্যু ও অনুশীলনের ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে গেছে। ফুটবলার, কোচিং স্টাফসহ বিরাট এক দল নিয়ে ১৫ নভেম্বর ঢাকায় আসার কথা ভারতের। এরই মধ্যে দলের নাম বাফুফের কাছে পৌঁছে গেছে। ১৫ ও ১৬ নভেম্বর অতিরিক্ত অনুশীলন করবে ভারতীয় দল। ১৮ নভেম্বর অফিশিয়াল অনুশীলনের সুযোগ পাবে দলটি। গত মার্চে বাংলাদেশ শিলংয়ে গিয়ে অনুশীলন করার মাঠ নিয়ে বেশ বিড়ম্বনার শিকার হয়েছিল। বাফুফে ভারতকে একই অভিজ্ঞতা দিতে চায় না। ভারতের জন্য সুব্যবস্থাই রাখা হচ্ছে। এতে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্য বাফুফের।
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন পর আসছে ভারতীয় ফুটবল দল। ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শেষবার মূল দল পাঠিয়েছিল বাংলাদেশে। এরপর ভারতের বয়সভিত্তিক দল বাংলাদেশে এলেও জাতীয় দল আসেনি। ২০২৩ সালে আসার কথা ছিল। সেবার করোনার কারণে ভারতীয় ফুটবল দল আর বাংলাদেশে আসেনি। দীর্ঘদিন পর ভারতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশে আসবে। এ কারণে দর্শকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা বিরাজমান। হামজা চৌধুরী-সামিত সোমরা বাংলাদেশ দলে যোগ হওয়ার পর ফুটবলে নতুন নতুন অনেক কিছুই দেখা যাচ্ছে। টিকিটের জন্য হাহাকার দেখা যায়। এক সময় যেখানে ডেকেও টিকিট বিক্রি করা যেত না। বর্তমানে অনলাইনে টিকিট ক্রয়ের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন সমর্থকরা। মাঠে প্রবেশ করার জন্য কয়েক ঘণ্টা আগেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। ১৮ নভেম্বরও একই দৃশ্য দেখা যাবে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে। দর্শকদের একটি জয় উপহার দিতে এবার বদ্ধপরিকর জামাল ভূঁইয়ারা। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক এরই মধ্যে বলেছেন, ‘এটা বড় ম্যাচ। বাংলাদেশ-ভারতের একটি ভালো ইতিহাস আছে। আমরা ভারতের সঙ্গে জিততে চাই।’ জামাল ভূঁইয়ারা সব সময়ই জয়ের কথা বলেন। অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সেই জয়ের দেখা কি পাওয়া যাবে?