নতুন এক প্রজাতির মাকড়সা আবিষ্কার করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস-এর একদল বিজ্ঞানী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের বালিয়াড়িতে লুকিয়ে ছিল এই মাকড়সা। নতুন প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছে অ্যাপটোস্টিকাস রামিরেজি। এটি ট্র্যাপডোর স্পাইডার গোত্রের একটি সদস্য। তবে এর নিকটাত্মীয় অ্যাপটোস্টিকাস সিমাস থেকে জিনগতভাবে বেশ আলাদা।
এই আবিষ্কারের মাধ্যমে আগের ধারণা ভেঙে গেছে যে, দুটি প্রজাতি আসলে একই। গবেষণাটি ২২ অক্টোবর ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার প্রধান লেখক ও ইউসি ডেভিসের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জেসন বন্ড জানান, নতুন এই মাকড়সাটি ক্যালিফোর্নিয়ার বালিয়াড়িতে বসবাসকারী এক সুন্দর প্রজাতি। তিনি বলেন, মানুষ সাধারণত মাকড়সাকে ভয় পায়, কিন্তু তারা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মাকড়সা প্রজাতি শনাক্ত হলেও এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, নতুন প্রজাতি কেবল বনজঙ্গলে নয়, পরিচিত স্থানেও লুকিয়ে থাকতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন প্রজাতিটি দেখতে অন্যদের মতো হলেও জিনগতভাবে এতটাই ভিন্ন যে মানুষের সঙ্গে বনোবো ও শিম্পাঞ্জির পার্থক্যের চেয়েও বেশি। এই প্রজাতির স্ত্রী মাকড়সা ১৫ বছরেরও বেশি বাঁচে এবং সারাজীবন মাটির নিচে গর্তে বাস করে। সেখানে তারা প্রজনন, সন্তান লালন-পালন এবং জীবনচক্র সম্পন্ন করে।
গবেষক বন্ড মনে করেন, ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে মাকড়সার জিনগত বৈচিত্র্য বোঝা সংরক্ষণ কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাদের আবাসস্থল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, নগরায়ণ ও দাবানলে দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। এতে এই প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়তে পারে, যা পুরো ইকোসিস্টেমে (প্রাকৃতিক পরিবেশব্যবস্থা) নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বন্ড জানান, মাকড়সারা বিপুল পরিমাণ পোকামাকড় খায় এবং অন্য প্রাণীদের খাদ্য হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাদের বিলুপ্তি প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
উল্লেখ্য, নতুন এই প্রজাতির নাম রাখা হয়েছে মার্টিনা গিসেল রামিরেজের নামে, যিনি ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, স্ট্যানিসলসের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল