দেশের মাত্র আড়াই শতাংশ মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সন্তুষ্ট। একই সঙ্গে ৯৬ শতাংশ মানুষ দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা চান এবং ৯৪ শতাংশ মানুষ চান দলগুলো নিজেদের আয়-ব্যয়ের হিসাব ও জবাবদিহিতা তৈরি করবে। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিএই) ১২ জেলার ওপর জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল গুলশানের একটি হোটেলে ‘গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ : জনমানুষের ভাবনা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় জরিপের এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপে দেখা যায়, ৫৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান মাঝামাঝি। এ ছাড়া ১৯ শতাংশ মানুষ সংস্কারকে প্রাধান্য দিলেও ২৪ শতাংশ মানুষ চান নির্বাচন। আর আগামী নির্বাচনে ব্যালটে ‘না’ ভোটের সুযোগ চান ৭৮ শতাংশ মানুষ। আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতভেদ থাকলেও যেন ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যটা ধরে রাখি। এখানে যেন আমরা মতানৈক্য না আনি।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই ঐকমত্য কমিশন সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কেউ কেউ এটিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা ও উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের ঐক্য আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা দরকার।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হয়নি, হাসিনার পতন হয়েছে। সব পর্যায়ে তার ফ্যাসিবাদ নানান রূপে এখনো রয়েছে। হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সক্ষমতায় আমরা সন্দিহান। আওয়ামী লীগের মিছিল দিনদিন বড় হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লন্ডনে তথ্য উপদেষ্টার ওপর হামলা হয়েছে। যারা জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে তাদের ওপর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন নিয়ে অবিশ্বাসের মাত্রা বাড়ছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব তা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই। চাপিয়ে দেওয়া কোনো সমাধান দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘দলগুলো নিজেদের কথা বলছে। কিন্তু যে সন্ধিক্ষণ জনগণ ধারণ করছে তারা জাতীয় ঐকমত্য চায়। একক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে গেলে অনিবার্য সংঘাতের দিকে যাবে দেশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আকাঙ্ক্ষা ঠিকভাবে পূরণ করতে পারছে না।