বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদান এবং জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর গতকাল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহ রিমান্ডের এ আদেশ দেন। শুনানিকালে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ‘নট কারেক্ট’ বলে আখ্যায়িত করেন সাবেক এ প্রধান বিচারপতি। এদিন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানো ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ওনার রায়ের কারণে তিনটি প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। এ রায় কেন দিয়েছেন? কার নির্দেশে দিয়েছেন? কারা জড়িত তা জানা দরকার। রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার শুনানিতে বলেন, রিটায়ার্ড হওয়ার ১৬ মাস পর তিনি এই রায় দেন। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারকে স্বৈরাচার বানানোর উদ্দেশ্যে তিনি এ রায় দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন বলেন, বাংলাদেশের একটি পুরোনো রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করতে এই রায় ব্যবহার করা হয়েছে। এ সময় অভিযোগগুলোর জবাবে এ বি এম খায়রুল হক বলেন, ‘ইটস নট ট্রু। নট কারেক্ট’। উল্লেখ্য, বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদান ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে খায়রুল হককে আসামি করে গত বছরের ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
২৪ জুলাই ধানমন্ডির বাসা থেকে বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওইদিন তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক এক হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এ বি এম খায়রুল হক। ২০১১ সালের ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসরে যান। তিনি প্রধান বিচারপতি থাকাকালে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে সাংবিধানিক শূন্যতার সূচনা হয়।