পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় একেবারেই বেহাল হয়ে পড়েছে। চলাচলের অনুপযোগী এ সড়কে চার উপজেলাবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে শত শত মানুষ ও যানবাহন।
স্থানীয়রা জানায়, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও আটঘরিয়া উপজেলার মানুষ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১২ সালে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক নির্মাণ করে। তবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। এরপর একে একে পুরো রাস্তাটিই ভেঙে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সড়কটি বেশি দিন টেকসই হয়নি। নির্মাণের তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই এটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়।
সড়কটি দিয়ে জেলার ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলার লোকজন পাবনা শহরে আসা-যাওয়া করেন। এর বিকল্প পথে চলতে গেলে তাদের ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হয়। এ ছাড়া আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের ওপর দিয়ে রাস্তাটি থাকায় এ উপজেলার বাসিন্দারাও চলাচল করে থাকে। সড়কটির অধিকাংশ অংশেই বড় বড় গর্ত, ভাঙাচোরা। কোথাও কোথাও কাঁচা রাস্তার মতো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে এসব গর্তে পানি জমে চলাচল একেবারেই অসম্ভব হয়ে যায়। এমনকি শুকনো মৌসুমেও এ রাস্তায় চলতে গিয়ে যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ী, রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চলাচল করেন। হাদল গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রউফ বলেন, এ রাস্তা দিয়ে বাজারে যেতে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে আরও বিপাকে পড়তে হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিয়ে যেতে অনেক সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। সড়কটি এখন নরকে পরিণত হয়েছে।
একই এলাকার শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন জানান, প্রতিদিন কলেজে যেতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। গাড়ি পাওয়া যায় না। আর পেলেও রাস্তায় এত গর্ত যে গাড়ি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ওই সড়কের সিএনজি চালক আবদুল আহাদ জানান, এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন আমাদের গাড়ির চাকা, যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যাত্রী নিয়ে যেতে ভয় লাগে।
পার-ভাঙ্গুড়া ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক রাস্তার দুরাবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার জানানো হলেও এখনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি।
একদন্ত ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন বলেন, কাজকর্মে আমাদের এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যেতে হয়, কিন্তু ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর যেতে এ রাস্তা বাদ দিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে ন্যূনতম ৩০ কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হয়।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আমি সড়কটি পরিদর্শন করেছি। এটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। পাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।