কলম্বিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মঙ্গলবার একাধিক বোমা বিস্ফোরণ ও বন্দুক হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য ও একজন বেসামরিক নাগরিক। দেশটির পুলিশ বলছে, এই হামলাগুলো ছিল সুপরিকল্পিত এবং সমন্বিত উদ্দেশ্য ছিল অঞ্চলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। খবর ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোরের।
হামলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর কালি ও তার আশপাশের এলাকা। পুলিশের স্টেশন ও পৌর ভবনগুলো ছিল হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য। করিন্টো শহরে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় একটি পৌর ভবনের, যার ধ্বংসাবশেষ পরে দেখা যায় বিস্ফোরিত গাড়ির পাশে।
কলম্বিয়ার পুলিশপ্রধান কার্লোস ফার্নান্দো ত্রিয়ানা জানান, হামলাকারীরা গাড়িবোমা, মোটরসাইকেলবোমা, আধুনিক রাইফেল ও এমনকি সন্দেহভাজন ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসন সন্দেহ করছে, একসময়ের শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্ক (FARC) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া গেরিলারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। পুলিশপ্রধান ত্রিয়ানা বলেন, এই হামলার সময়কাল ফার্ক-বিচ্ছিন্ন নেতা ‘মাইমবু’ ওরফে লেইডার জোহানি নস্কুয়ের হত্যার তৃতীয় বার্ষিকীর কাছাকাছি হওয়ায় এর সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে।
এই হামলার কয়েক দিন আগেই রাজধানী বোগোটায় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও রক্ষণশীল রাজনীতিক মিগুয়েল উরিবের ওপর প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টা হয়। ১৫ বছর বয়সী এক কিশোর সন্দেহভাজনভাবে কাছ থেকে তাঁর মাথায় দুটি গুলি চালায়। তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান, তবে এই ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
কলম্বিয়ার জনগণ ইতোমধ্যে আশি ও নব্বইয়ের দশকের রক্তাক্ত ইতিহাস মনে করে শঙ্কিত। সেই সময় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, গেরিলা হামলা ও মাদকচক্রের তাণ্ডব দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল। বর্তমানের সন্ত্রাসী তৎপরতা অনেকের মনেই সেই অতীতের ভয়াল দিনগুলোকে আবার ফিরিয়ে আনার আশঙ্কা জাগাচ্ছে।
পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী সারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে টহল জোরদার করেছে এবং সন্দেহভাজনদের শনাক্তে তদন্ত শুরু হয়েছে। সরকার এখনো হামলাকারীদের পরিচয় ও উদ্দেশ্য নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেনি।
বিডি প্রতিদিন/মুসা