সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খবরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বাগেরহাট জেলার সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। খসড়া তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে যুক্ত করার খবরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে ক্ষোভ দেখিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলাবাসী। গতকাল সকালে উপজেলার চান্দুরা নামক এলাকায় কয়েক শতাধিক ব্যক্তি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিজয়নগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন। অবরোধ থেকে ঐক্যবদ্ধ বিজয়নগর উপজেলাকে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত আগের সংসদীয় আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। এদিকে, গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একদল সংক্ষুব্ধ নাগরিক ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের ক্ষোভের যুক্তি তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে আসনের সীমানা আগের মতোই রাখার আবেদন জানিয়েছেন তারা। এরপর বিকালে নির্বাচন ভবন ত্যাগ করার সময় নিচে মানববন্ধনেও দাঁড়ান তারা। তবে পুলিশের বাধার মুখে পরে চলে যান। ইসি সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কোনো দলের পক্ষ থেকে আসিনি। তবে এখানে বিএনপি, এনসিপিসহ অন্যান্য দলের নেতা ও সাধারণ নাগরিকরা রয়েছে। এদের অনেকে হয়তো ভোটেও দাঁড়াতে পারেন। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন দিয়েছি।’ অপরদিকে, বাগেরহাট জেলার একটি সংসদীয় আসন কমিয়ে বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সীমানা পুনর্গঠন করে নতুন আসন বিন্যাসে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও রামপাল) ও বাগেরহাট-৩ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা ও মোংলা) অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে এমন তথ্য প্রকাশ করার পর জেলাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন ধরে রাখতে আগামী শনিবার থেকে জেলার সব মহাসড়ক অবরোধ করে মোংলা বন্দরকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার কর্মসূচি দিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতসহ জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতার। ইসির ওই প্রস্তাব ঘিরে বুধবার রাত থেকে বাগেরহাটে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।
প্রতিবাদে বাগেরহাট জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মাঠে নেমেছেন। বুধবার রাতে বাগেরহাট শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে বাগেরহাট জেলা বিএনপি। গতকাল দুপুরে বাগেরহাট জেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দ এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এর আগে বাগেরহাট জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ছাড়া বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মোংলায়।