কয়েক দিন আগে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে বায়ু দূষণের কারণে বমি করেছিলেন লঙ্কান ক্রিকেটার সুরঙ্গা লাকমাল। ভারতের রাজধানীর বায়ুদূষণের মাত্রা কতটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তা অনুধাবন করতে এই একটি ঘটনাই যথেষ্ট। এর প্রভাবে স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন কাবু হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বায়ুদূষণের লাগাম টানতে দিল্লি সরকার নতুন এক অভিনব উপায়ের আশ্রয় নিয়েছে।
দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ওয়াটার ক্যানন বা জলকামান মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ‘কামান’ মূলত সূক্ষ্ম পানি নিক্ষেপ করে আকাশে। আর এতে বাতাসের ধূলিকনা পানির সংস্পর্শে এসে ভারি হয়ে মাটিতে নেমে আসবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
কামানটির নির্মাতা ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ক্লাউড টেক জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণের শহর দিল্লির আকাশে দ্রুত গতিতে পানি ছিটাতে পারে এই কামান। এতে করে ভয়ংকর দূষণ দূর হয়।
কামানটি একটি ট্রাকে বসানো হয়েছে। দিল্লির শিল্প এলাকা আনন্দ বিহারে এটার পরীক্ষা চালানো হয়েছে। কামানটি খনি ও নির্মাণাধীন ভবনের ধুলা মোকাবিলায় ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। একেকটি কামান নির্মাণে খরচ পড়ে ৩১ হাজার ডলার।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জানায়, প্রতি মিনিটে এই কামান আকাশের দিকে ১০০ লিটার পানি ছুড়তে পারে। চীনের উদাহরণ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেইজিংয়ে বায়ুদূষণ অত্যন্ত শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছালে ২০১৫ সালে আকাশে পানি ছুঁড়ে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির বায়ু দূষণ থেকে মনোযোগ সরাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কারণ এটা কোনও সমাধান নয়। এটা হয়ত স্পর্শকাতর স্থানে সাময়িকভাবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু দূষণের সমাধান নিহীত উৎস নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে। রাস্তায় পানি ছুড়ে তা করা যাবে না।
দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েটি সভা করেছেন তারা। সেখানে হেলিকপ্টার থেকে পানি ছিটানোসহ নানা উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এরপর এ কামান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আম আদমি পার্টির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ কামানের ছবি প্রকাশ করে একে সরকারের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে এবং এ জলকামানের মাধ্যমে দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আশা করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/ ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান