দলের সভাপতি পদে ফিরতে অনীহা রাহুল গান্ধী। পরিবারের বাইরে গিয়ে দলের নেতৃত্বে নিয়ে ভাবতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কাও। এমন পরিস্থিতিতে মনমোহন সিংহ এবং একে অ্যান্টনির মতো অভিজ্ঞ নেতাদের হাতে দলের ভার তুলে দেওয়া যায় কি না, সোমবার তা নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে কংগ্রেস। খবর আনন্দবাজারের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতৃত্বের অভাব এবং দলের সাংগঠনিক সমস্যাগুলো তুলে ধরে ইতিমধ্যেই সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিয়েছেন ২৩ জন শীর্ষস্থানীয় প্রবীণ ও নবীন কংগ্রেস নেতা। ওই চিঠিই বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হতে চলেছে বলে জানা গেছে।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। তার পর দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন সোনিয়া গান্ধী। ঠিক ছিল, নয়া সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব সামলাবেন তিনি।
কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে সোনিয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত সভাপতি নির্বাচন করে উঠতে পারেনি কংগ্রেস। তা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই দলের মধ্যে অসন্তোষ জমা হচ্ছিল। প্রকাশ্যে তা নিয়ে মন্তব্যও করতে দেখা যায় একাধিক নেতাকে।
তার মধ্যেই কপিল সিব্বল, শশী তারুর, গুলাম নবি আজাদ, পৃথ্বীরাজ চৌহান, বিবেক তনখা, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি, রাজ বব্বর, অরবিন্দ্র সিংহ লাভলি সন্দীপ দীক্ষিত-সহ দলের শীর্ষস্থানীয় ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সম্প্রতি সোনিয়াকে চিঠি লেখেন। তাতে বলা হয়েছে, সকলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন, বিপদে আপদে সকলের পাশে থাকবেন এবং ২৪ ঘণ্টা দলের মুখ হিসেবে যাকে তুলে ধরা যায়, এমন কাউকে পূর্ণমেয়াদি সভাপতিত্বের জন্য নির্বাচিত করা হোক।
শুধু তাই নয়, ব্লক স্তর থেকে দলের হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে যাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, সেই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডব্লিউসি)-কেও নির্বাচনের মাধ্যমে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব দিয়েছেন ওই কংগ্রেস নেতারা। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, দলের ওপর থেকে বিশ্বাস হারাচ্ছে যুব সম্প্রদায়। নেতৃত্বের অভাবে তাদের সঠিক দিশা দেখাতে পারছে না দল। বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির উত্থানে কংগ্রেসকে নিয়ে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে। সততার সঙ্গে এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে দেখা উচিত।
সভাপতি পদে ফেরার কোনো ইচ্ছেই যে রাহুলের নেই, তা দলের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাকে ফেরানো উচিত কি না, তা নিয়েও দ্বিমত তৈরি হয়েছে দলে। দলের একটি অংশ আবার সোনিয়াকেই দায়িত্বে রাখার পক্ষপাতি।
কিন্তু আগামী দুবছরে পশ্চিমবঙ্গসহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সোনিয়া সেই ধকল সইতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। তাই গান্ধী পরিবারের বাইরে বেরিয়ে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত তাদের। তাই মনমোহন সিংহ এবং একে অ্যান্টনির মতো প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতাদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পক্ষে অনেকেই।
বিডি প্রতিদিন/এমআই