করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের প্রথমার্ধে রেকর্ড পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্রিটিশ অ্যারোস্পেস জায়ান্ট রোলস-রয়েস। সংস্থাটি জানায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের নিট ক্ষতি হয়েছে ৫৪০ কোটি পাউন্ড। খবর বিবিসি।
এ বিষয়ে রোলস-রয়েসের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন ইস্ট বিবিসিকে বলেন, করোনাকালীন ভ্রমণ চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালে যে চাহিদা ছিল, সেটি আগামী ৫ বছরেও ফিরে আসবে না।
এদিকে, কোম্পানিটি ৩ হাজার কর্মী ছাঁটাই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যামশায়ার ও ল্যাঙ্কাশায়ারের কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বে কোম্পানিটির ৫০ হাজার কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২৫ হাজার যুক্তরাজ্যের। এর আগে অবশ্য কোম্পানিটি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে তার বৈশ্বিক কর্মী বাহিনীর এক-পঞ্চমাংশ ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল।
রোলস-রয়েসের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন ইস্ট বিবিসির টুডে প্রোগ্রামে বলেন, ২০২০ সালে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী তাদের সাড়ে চার হাজারের মতো কর্মী চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। এ বছর রোলস-রয়েস ৫০০ জেট ইঞ্জিন সরবরাহের প্রত্যাশা করেছিল।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এর অর্ধেক পরিমাণ সরবরাহ করা যেতে পারে। এছাড়া কোম্পানিটি তার স্পেনের আইটিপি অ্যারো ইউনিট এবং অন্য সম্পদ বিক্রি করে অন্তত ২০০ কোটি পাউন্ড সংগ্রহের কথা ভাবছে।
তিনি আরও বলেন, রোলস-রয়েস ইঞ্জিন বিক্রি করে নয়, বরং সেগুলোর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে উপার্জন করে থাকে। এর মানে হলো, উড়োজাহাজ ল্যান্ডেড অবস্থায় থাকলে আয়ও থেমে যায়। আর মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী ঠিক এ ঘটনাই ঘটেছে। করোনাসংক্রান্ত বিধি-নিষেধের কারণে বসে থাকতে হয়েছে রোলস-রয়েসের ইঞ্জিন ব্যবহারকারী উড়োজাহাজগুলোকে।
এদিকে, সংস্থাটি জানিয়েছে, বিমান পরিবহন খাতের চলমান অনিশ্চয়তার মধ্যে ব্যাল্যান্স শিটকে শক্তিশালী করতে তারা বিকল্প উপায় খতিয়ে দেখছেন। তারা যেকোনোভাবেই উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলে সামনের দিনে মুনাফায় ফিরতে চাইছে।
উল্লেখ্য, ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বিলাসবহুল ব্রিটিশ অটোমোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থা রোলস-রয়েস বেশ সুনামের সাথে ব্যবস্থা পরিচালনা করে আসছে। তবে করোনা অতিমারিতে সংস্থাটি বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। এজন্য তারা বর্তমানে মধু উৎপাদনের কাজও শুরু করেছে।
বিডি প্রতিদিন/ আবু জাফর