১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৪১

নৌকায় স্কুলশিক্ষিকার বেলি-ড্যান্স কাণ্ডের পর মিশরে নতুন বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক

নৌকায় স্কুলশিক্ষিকার বেলি-ড্যান্স কাণ্ডের পর মিশরে নতুন বিতর্ক

ডানের দুই নারীকে টিকটক করার কারণে কারাদণ্ড দিয়েছিল মিশরের আদালত, বামে বেলি-ড্যান্সের প্রতীকী ছবি

মিসরে বেলি-ড্যান্স করায় আয়া ইউসুফ নামের এক স্কুলশিক্ষিকাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে তালাক দিয়ে ঘরছাড়া করেছেন তার স্বামীও। বছর তিরিশের এই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকাকে নিয়ে এমন কাণ্ডে ফের প্রশ্নের মুখে নারীদের অধিকার। 

জানা গেছে, নীল নদে নৌকার উপরে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে বেলি-ড্যান্স করার সময় একজন সহকর্মী অনুমতি ছাড়াই তার নাচের রেকর্ড করেন। ভিডিওতে পুরুষ সহকর্মীদের পাশাপাশিই নাচতে দেখা যায় তাকে। ভিডিওতে, আয়াকে ইসলামিক স্কার্ফ এবং একটি দীর্ঘ-হাতা পোষাক পরে নাচতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে আরব নেট মাধ্যমে এই ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে মিশরে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ বলেছেন, রক্ষণশীল পরিবারের কথা ভাবা উচিত ছিল আইয়ার। অনেকে প্রশংসাও করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে মিশরে একের পর এক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় নারীদের হেনস্থা করা হয়েছে।

২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট আবদেল-ফাতা আল-সিসি মসনদে আসার পর এ জাতীয় ঘটনা বেড়েই চলেছে। একটি সাক্ষাত্কারে আইয়া জানিয়েছেন, স্বতস্ফূর্তভাবে নাচ করছিলেন তিনি ও তার সহকর্মীরা। আল-ওয়াতন সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তিনি জানিয়েছেন, কে এমন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিল তিনি জানেন না। বিনা অনুমতিতে এই ভিডিও পোস্ট কে বা কারা করেছেন জানলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন আইয়া।

টুইটারের এক ব্যবহারকারী এই ভিডিও দেখে মন্তব্য করেন, একজন বিবাহিতার পক্ষে এভাবে নাচ করা ঠিক নয়! একজন লেখেন, লজ্জাজনক। এরপরই প্রশ্ন উঠছে, স্বাধীনভাবে একজন মানুষ হিসেবে কোনও মহিলা কি বাঁচতে পারেন না?

যদিও এই ঘটনা নিয়ে হইচই হওয়ার পর কাজে পুনর্বহাল করা হয়েছে আইয়াকে। মিশরের নারী আন্দোলন কর্মী নিহাদ আবু আল কাসমান কটাক্ষ করে বলেন, আদালতের কাছে নাচের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। তাহলে বাড়ির কোনও অনুষ্ঠানেও মহিলারা তা মেনে চলবেন।

১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সি ৯০ ভাগ মিশরীয় মহিলা ২০১৯ সালে হেনস্থার মুখোমুখি হয়েছেন, এমনটাই জানাচ্ছে আরব ব্যারোমিটার রিসার্চ নেটওয়ার্ক। ২০২১ সালের জুলাই মাসে কায়রোর আদালতে ‘জনগণের মনপসন্দ নীতি ভঙ্গ করার অপরাধে’ ছয় থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে দু'জন নারীর। গত কয়েক দশকে মিশরে একের পর এক নারী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আরও বেশি রক্ষণশীল হয়ে উঠেছে মিশর।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর