চীন সীমান্তের কাছে উত্তর কোরিয়ার নতুন এক গোপন ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির অস্তিত্ব মিলেছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিনপুং-ডং ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে সর্বোচ্চ ৯টি পারমাণবিক সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) এবং মোবাইল লঞ্চার রাখা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ পূর্ব এশিয়ার অনেক অঞ্চলে আঘাত হানতে সক্ষম।
স্যাটেলাইট ছবি, উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীর সাক্ষাৎকার, গোপন নথি ও উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার কাছে ১৫ থেকে ২০টি ঘোষণাহীন ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ও ওয়ারহেড সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।
সিনপুং-ডং ঘাঁটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৪ সালে এবং ২০১৪ সাল থেকে এটি সক্রিয়ভাবে চালু আছে। প্রায় ২২ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এ ঘাঁটি পাহাড়ি উপত্যকায় গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে প্রবেশপথ, সদর দফতর, গুদাম, ক্ষেপণাস্ত্র সহায়ক অবকাঠামো ও আবাসিক ভবনও রয়েছে। অনেক স্থাপনাকে গাছপালা দিয়ে আড়াল করা হয়েছে, যাতে স্যাটেলাইটে সহজে চিহ্নিত করা না যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার হাতে হোয়াসং-১৫, হোয়াসং-১৮ বা অঘোষিত নতুন ধরনের আইসিবিএম থাকতে পারে। ঘাঁটিতে থাকা মোবাইল লঞ্চার যন্ত্রগুলো যুদ্ধের সময় ক্ষেপণাস্ত্র বহন ও দ্রুত নতুন স্থানে নিক্ষেপের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন সীমান্তের কাছে ঘাঁটি বানিয়ে উত্তর কোরিয়া কৌশলগত সুবিধা নিয়েছে। এ ধরনের স্থাপনা ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য দেশ চাইলে চীনকেও ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। এর মাধ্যমে পিয়ংইয়ং (উত্তর কোরিয়ার রাজধানী) আসলে নিজেকে আরও সুরক্ষিত করছে।
বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার হাতে ৪০ থেকে ৫০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে বলে ধারণা করা হয়। দেশটির নেতা কিম জং উন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ত্র কর্মসূচি আরও জোরদার করেছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল