সাইবার জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কম্বোডিয়ায় আটক ৬৪ জন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিককে শনিবার দেশে ফিরিয়ে আনার পর তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশটির একজন পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
কম্বোডিয়ায় ভুয়া চাকরি এবং কয়েক ডজন কোরীয় নাগরিককে অপহরণের সাথে জড়িত জালিয়াতি কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে আলোচনা করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া গত বুধবার একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “মোট ৬৪ জন নাগরিক ইনচিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে পৌঁছেছেন।”
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, কম্বোডিয়ায় প্রায় ৬০ জন দক্ষিণ কোরিয়ানকে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে আটক করে কর্তৃপক্ষ এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়।
চলতি বছর কম্বোডিয়ায় একজন কোরীয় কলেজ ছাত্রের উপর নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক জনরোষের পর এই প্রত্যাবাসন শুরু হয়েছে, যা একটি অপরাধ চক্রের কাজ বলে জানা গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিশেষ ফ্লাইটে ওঠার পরপরই ওই ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ইনচিয়ন বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ৬৪ জনকে অপরাধী সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে এবং তাদের নিজ নিজ মামলার বিচারাধীন থানায় স্থানান্তর করা হবে।
টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সন্দেহভাজনদের অনেকেই মুখোশ এবং টুপি পরা ছিল। তাদের দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা বিমানবন্দরের আগমন কক্ষে নিয়ে যান। তাদের হাত দু’দিকে শক্ত করে বাঁধা ছিল।
জাতীয় তদন্ত কার্যালয়ের প্রধান পার্ক সুং-জু বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যাবাসিত ব্যক্তিরা ভয়েস ফিশিং, প্রেম কেলেঙ্কারি এবং তথাকথিত ‘নো-শো’ জালিয়াতি প্রকল্পের মতো বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উই সুং-ল্যাক পূর্বে বলেছেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে জালিয়াতি কার্যক্রমে ‘স্বেচ্ছায় এবং অনিচ্ছাকৃত উভয় অংশগ্রহণকারী’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম জিনা কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি কম্বোডিয়ার এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ দমনের চলমান প্রচেষ্টা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি’ নিশ্চিত করেছেন।
সিউল জানিয়েছে, কম্বোডিয়ায় জালিয়াতি কার্যক্রমে জড়িত প্রায় দুই লাখ লোকের মধ্যে প্রায় এক হাজার দক্ষিণ কোরিয়ান রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কম্বোডিয়ায় কোটি কোটি ডলারের অবৈধ শিল্পটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। হাজার হাজার মানুষ অনলাইনে জালিয়াতি করছে। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় এবং কেউ কেউ সংগঠিত অপরাধী গোষ্ঠীর দ্বারা বাধ্য হয়ে জালিয়াতির নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে। সূত্র: আল-জাজিরা, ডয়েচে ভেলে, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
বিডি প্রতিদিন/একেএ