হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি সম্ভব। তবে এই সুযোগও সীমিত হয়ে আসছে। তবে যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ করার বিষয়টি অনেক জটিল। এই মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। সোমবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরও বলেছেন, হামাসের সঙ্গে অন্তত ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি সম্ভব, যা দেশের উত্তরের লেবানন সীমান্তেও কিছুটা স্থিতিশীলতা আনতে পারে। গতকাল মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির এক খবরে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, গাজায় জিম্মিদের মুক্তির জন্য ছয় সপ্তাহের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির দিকে আগানো যেতে পারে। গাজায় ক্রমবর্ধমান প্রাণহানির মধ্যে হামাসের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল তাতে রাজি নয়। হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলমান ভয়াবহ যুদ্ধের ইতি টানতে মিসর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও গাজায় যুদ্ধ বিরাজমান। হামাসের দাবি হচ্ছে অনতিবিলম্বে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে এবং উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তবে ইসরায়েল মাত্র দেড় মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে তাদের সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে। উভয় পক্ষের ভিন্ন দাবির ফলে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর আলোচনা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে না।
ইসরায়েলের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি তিন পর্বে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে। সেখানে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ৭০ জন জিম্মির মুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইসরায়েলের ধারণা এসব জিম্মি এখনো জীবিত রয়েছেন। বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগার থেকে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তির পাশাপাশি দেশটির জনবহুল এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। এ ছাড়া গাজায় যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে তাদের নিজ বাসস্থানে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া হবে। অস্থায়ী এই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গাজাবাসীর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সহায়তার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।
গাজায় আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, হতাহত ৬৫ : খান ইউনিসের কাছে একটি আশ্রয়শিবির। এ জায়গাটি ঘোষিত মানবিক এলাকা। সেখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা ছিলেন। সেখানেই অন্তত চারটি ক্ষেপণাস্ত্র এসে আঘাত করে বলে আবাসিক ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে এর মধ্যে কতজন মারা গেছেন, কতজন আহত হয়েছেন, সেই হিসাব তারা দেয়নি। গতকাল সকালে এই হামলার পর ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হামাসের কমান্ড সেন্টারকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে। গাজা সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, অন্ততপক্ষে ২০টি তাঁবুতে আগুন ধরে যায়। যে জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আঘাত করে, সেখানে ৩০ ফুটের গর্ত হয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষর কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে হামাসের সঙ্গে যুক্ত শেহাব বার্তা সংস্থা জানিয়েছিল, ৪০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আর আহত হয়েছেন ২৫ জন।