জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে সুদানে চলমান হত্যাকাণ্ডে বন্ধে জি-২০ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার সাউথ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের সুদানে শান্তি প্রয়োজন। আমরা সেখানে যুদ্ধবিরতি, অবাধ মানবিক সহায়তা প্রদান এবং দেশে অস্ত্র ও বিদেশি যোদ্ধাদের সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে যুদ্ধে লিপ্ত সুদানি সশস্ত্র বাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বাহিনীকে আলোচনার টেবিলে আসতে হবে। সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা করে এবং অস্থিতিশীলতার মূল কারণগুলো মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটতে হবে। গুতেরেস সতর্ক করেছেন, পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলেও নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) অন্যতম শীর্ষ নেতা আবদেল রহিম হামদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। রহিম বাহিনীটির দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও এর প্রধান মোহাম্মেদ হামদান দাগালোর ভাই। দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে চলমান দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। -এপি
তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও বর্বরতা চালানোর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল জানিয়েছে, রহিমের বাহিনীর নির্যাতনের কারণেই এ ব্যবস্থা। এর মধ্যে রয়েছে গত মাসে দারফুরের গুরুত্বপূর্ণ শহর আল-ফাশের দখল। ইইউ এসব বর্বরতার সর্বোচ্চ নিন্দা জানায়। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আবদেল?রাহিম হামদানকে ইউরোপে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার কিছু সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইইউর ২৭টি দেশ থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনো লভ্যাংশ বা অন্যান্য সম্পদ ব্যবহার করতে পারবেন না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাস সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরএসএফের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে এটি তারই একটি সংকেত। তিনি আরও বলেন, সুদানের পরিস্থিতি অত্যন্ত অবনতি হচ্ছে। আল-ফাশের দখল এই যুদ্ধে আরও একটি ধ্বংসাত্মক অধ্যায় শুরু করেছে। এ বিষয়ে আরএসএফ এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তারা আল-ফাশের শহর ১৮ মাসের অবরোধের পর সেনাবাহিনী থেকে দখল করে পুরো দারফুর অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের নৃশংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়ে লাখো মানুষ আশ্রয়শিবিরে অবস্থান নিয়েছে। সুদানে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই বছরেরও বেশি সময় আরএসএফ ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রও ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সংঘাত শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই রহিমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। -আনাদুলো এজেন্সি
মহাসচিব হাইতি, ইয়েমেন, মিয়ানমার এবং অন্যান্য অঞ্চলেও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে শান্তি বেছে নেওয়ার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানান। গত সপ্তাহে কাতারে ডিআরসি ও এমটুয়েন্টি একটি ফ্রেমওয়ার্ক শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। যা পূর্ব কঙ্গোর লড়াই বন্ধ করতে সাহায্য করবে। চলতি বছর সুদানে চলমান সংঘাতে হাজার হাজার অসামরিক ব্যক্তি নিহত এবং লাখ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে।