প্রচণ্ড চাপের মুখে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকারি কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি অশোক কুমার গাঙ্গুলি। গতকাল সোমবার তিনি ইস্তফা দিয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) জানিয়েছে।
সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলেই রাজভবনে যান অশোক গাঙ্গুলি। সেখানে প্রায় ৪৫ মিনিট কথা হয় রাজ্যপাল এমকে নারায়নণের সঙ্গে। এরপর অশোক তার পদত্যাগপত্র রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন। তবে রাজভবন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
রবিবারই বিশষ্টি আইনজীবী ও দেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরাবজির সঙ্গে ফোনে কথা হয় অশোক গাঙ্গুলির। তিনি ফোনে সোরাবজিকে জানান যে, তিনি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছেন। সোরাবজিও তাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন।
এক ইন্টার্নির যৌন হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করে গত দেড়মাস ধরেই তার পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছিল। তার পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসসহ কংগ্রেস, বিজেপি সবাই।
অশোক বাবুর অপসারণ চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে দু'বার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু সে সময় নিজের ইস্তফা না দেওয়ার দাবিতে অনড় ছিলেন অশোক গাঙ্গুলি।
এক নারী ইন্টার্ন আইনজীবী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে অশোক কুমার গাঙ্গুলির অধীনে ইন্টার্নশিপ চলাকালীন তাকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। দিল্লিতে অবস্থানের সময় এক পাঁচতারা হোটেলে (লা মেরিডিয়ান) অশোক গাঙ্গুলির হাতে ওই যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় বলে নিজের ব্লগে অভিযোগ করেন ওই নারী আইনজীবী।
চলতি বছরের গোড়ার দিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদে বসেন অশোক গাঙ্গুলি। ওই নারী আইনজীবীর অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতিকে নিয়ে একটি প্যানেল গঠিত হয়। এরপর প্রাথমিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে অশোক গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ সত্য বলে জানায় বিচারপতিদের প্যানেল।