আবার একটা বছরের বিদায়। স্বাগতম ১৪২৩। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের সাথেই পশ্চিমবঙ্গেও পালিত হচ্ছে বর্ষবরণ উৎসব। উৎসবের মেজাজেই বাংলা বর্ষবরণ পালিত হল পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন অংশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে। ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ মেতে ওঠে ঐতিহ্যময় বর্ষবরণ উৎসবে। নতুন কাপড়, হালখাতা,মিষ্টির প্যাকেট সব মিলিয়ে বেজে উঠল নতুন বছরের জয়গান।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে কিছুদিন আগেই। ফলে প্রচার এখন তুঙ্গে। কিন্তু তাতে কি? ভোটের জায়গায় ভোট। বাঙালির উৎসবে ভোট একবারেই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। কলকাতা শহর ছাড়া নববর্ষের দিনটিতে রাজ্যটির গ্রামেগঞ্জেও অন্য ছোঁয়া লক্ষ্য করা গেছে। এই বিশেষ দিনকে কেন্দ্র করেই কলকাতার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বের হয় প্রভাতফেরী। ভোর হতেই কালীঘাটের কালী মন্দির, দক্ষিণেশ্বর মন্দির, আদ্যাপীঠ, তারাপীঠসহ রাজ্যটির বিভিন্ন ধর্মস্থানে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পড়েছিল। নতুন বছরের শুভ কামনা করে অনেকেই পুজো দেন। অনেক বাড়িতেও এদিন লক্ষ্মী-গণেশের পুজো হয়। সঙ্গে আয়োজন করা হয়েছিল বিশেষ খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও। এমনকী অনেক নামী রেস্তোরাঁগুলিতেও বিশেষ বাঙালি ভোজেরও আয়োজন করা হয়। নস্ট্যালজিয়ার মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে মেনু। মোঁচার ঘন্ট, কলার বড়া, চিংড়ির মালাইকারি, শুক্তো, চকোলেট, সন্দেশ, রসগোল্লা আরও কত কি!
আসলে বাঙালির কাছে বছরের এই একটা দিনের আকর্ষন একেবারেই আলাদা। এদিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মভিটে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতেও সকাল থেকে সঙ্গীত, আবৃত্তি সহযোগে বর্ষবরণের নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। নাচ, গান, আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে বর্ষবরণে মেতে উঠে বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীরাও।
নবজাগরণ এবং ভাষা ও চেতনা সমিতির আয়োজনে এদিন সকাল ৮টা থেকে বর্ষবরণের উৎসব শুরু হয়েছে কলকাতার একাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে। সারা দিন ধরে চলবে কথা, কবিতা, নাচ, গান, নাটক।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণেও আয়োজন করা হয়েছে নববর্ষের উৎসব। এদিন বিকেলে মিশন প্রাঙ্গণেই বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর। নাচ, গান, পুতুল নাচের পাশাপাশি ছিল সুস্বাদু খাবারের আয়োজন।
নববর্ষের দিনটিকে কাজে লাগাতে পিছিয়ে ছিল না রাজনীতিবিদেরাও। গান-কবিতার পাশাপাশি সুকৌশলেও নিজেদের প্রচার সেরেছেন নির্বাচনী প্রার্থীরা।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৪ এপ্রিল, ২০১৬/ রশিদা