পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শেষ দফার ভোটের আগে ফের ভারতের নির্বাচন কমিশনকে তোপ দাগলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। নির্বাচনী প্রচারণা থেকে কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, ‘যা করেছেন, তার জন্য ভুগতে হবে’।
গতকাল রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চন্ডীগড়ে এই প্রচারণা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান নির্বাচন কমিশন ও পুলিশকে একযোগে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী। ভোটের দিন ১৪৪ ধারা জারি নিয়ে মমতা বলেন, ‘নির্বাচনের নামে নির্যাতন চালাচ্ছে কমিশন। দিল্লির সন্ত্রাস চলছে। ভোটের নামে কারফিউ জারি করা হচ্ছে বাংলায়। যারা করেছেন আগামীদিনে তার জন্য ভুগতে হবে’।
কমিশনের নির্দেশ মেনে চলায় পুলিশকর্মীদের ‘ভীতু পুলিশ’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘সিপিএম-কংগ্রেস ও বিজেপি’র গাঁটছড়া হয়েছে। আর সেই জোট’কে সাহায্য করতে কাজে লাগানো হয়েছে দিল্লির কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। আর তাদের সাহায্য করেছে এরাজ্যের কিছু ভীতু পুলিশ’।
পুলিশের অত্যাচারে তিন রাত্তির ঘুমাতে পারেননি বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল নেত্রী বলেন, আমি পুলিশকে কখনও শান্তিভঙ্গ করতে দেব না। কিন্তু যে পুলিশরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন আমি তাদের পুরো রেকর্ডটাই করে রাখছি। আমি যদি বেঁচে থাকি, আমি এর উপযুক্ত জবাব দেবো। যারা এই পরিকল্পনা করেছে সে যেখানেই হোক না কেন, অনেক হয়েছে। যারা আমাকে আঘাত করে তারা ধ্বংস হয়ে যায়
তবে এই প্রথম নয়, চলমান নির্বাচনের প্রচারে এর আগেও রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি কমিশনকে নিশানা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বিরোধীদের ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে’ বুঝে নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন একাধিকবার। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে তাকে শোকজ করায় নির্বাচন কমিশনকেও কটাক্ষ করেন মমতা।
প্রসঙ্গত, আগামী ৫ মে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শেষ দফায় পূর্ব মেদিনীপুর (১৬) ও কোচবিহার (৯)-এই দুই জেলার ২৫ টি আসনে ভোট। তার আগেই কমিশনকে তোপ দাগলেন তৃণমূল প্রধান।
রাজনৈতিক মহলের মতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে আসলে বাংলার ওপর দিল্লির আধিপত্যের বিরুদ্ধে মানুষের আবেগকে কাজে লাগাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেব’ বলে এর আগে আঙুল তুলে কমিশনকে শাসানি দিয়েছিলেন মমতা। তৃণমূল নেত্রীর সেই শাসানিকেও কটাক্ষ করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধীরা বলছেন দিদি যে দেখে নিতে নিতে পারেন, রাজ্যে তার একাধিক উদাহরণ রয়েছে। কার্টুন ঘটনায় অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। মমতার সভায় সারের দাম নিয়ে কথা বলায় এখনও আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে শিলাদিত্য চৌধুরীকেও। আছে আরও অনেক ঘটনা।
বিডি-প্রতিদিন/ ০২ মে, ২০১৬/ আফরোজ