বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মন্ত্রী হয়েছেন ৪২ জন। কিন্তু তাতে বাড়তি আত্মতুষ্টি যেন দানা না বাঁধে তার জন্য প্রথমেই মন্ত্রীদের সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কোথাও ফাঁকি দেওয়ার তো জায়গাই নেই। জানিয়ে দিয়েছেন, বাজেট অধিবেশন শেষ হলেই প্রত্যেক মন্ত্রীকে জমা দিতে হবে উন্নয়ন প্রকল্পের একাধিক অভিনব ‘আইডিয়া’। শুধু চমকদার নয়, আগামী ৫ বছর যে পরিকল্পনার উপর দাঁড়িয়ে রাজ্যের উন্নয়নে দৃঢ়ভাবে প্রশাসনিক কাজ নিয়ন্ত্রণ হবে, মাথা খাটিয়ে বের করতে হবে এমন সব বুদ্ধি।
পাঁচ বছরে কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, সবুজসাথী, খাদ্যসাথীর মতো একাধিক প্রকল্প নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহল বা উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্যও নানা প্রকল্প নিয়েছেন তিনি। তার সুফল রাজ্যবাসী পেয়েছে। ভোটে তার প্রভাবও পড়েছে। কিন্তু এবার শুধু তিনি একা নন, মমতা চান তার প্রত্যেক মন্ত্রীই নিজেদের মতো করে বুদ্ধি বের করবে নানা প্রকল্পের। জমা পড়ুক নানা অভিনব আইডিয়া। বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায়ককে মন্ত্রিসভায় এনেছেন মমতা। তিনি চান, বাংলার উন্নয়নে এবার প্রত্যেকের মস্তিষ্ক চলুক সমান তালে। তার এই নির্দেশের জেরে ইতিমধ্যে মাথার ঘাম পায়ে পড়তে শুরু করেছে মন্ত্রীদের।
রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানাচ্ছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানে সেটাই শেষ কথা। ফলে তার মতো করে না পারলেও, আইডিয়া তো দিতেই হবে।” সঙ্গে এও বলা হয়েছে, সেই ‘আইডিয়া’ কীভাবে কতটা কাজে লাগানো যায়, তার ভিত্তিই বা কতটা, আপাদমস্তক খতিয়ে দেখে তা জানাতে হবে। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে সরকার।
কী ধরনের আইডিয়া? তা নিয়ে একেবারে মুখে কুলুপ প্রত্যেকের। বলছেন, সব জমা পড়বে বাজেট পাসের পর, মুখ্যমন্ত্রীর টেবিলে। নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর কথায়, “ভোট হয়েছে একেবারে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে। তার কাজ দেখে। তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের কাজ দেখে। রাজ্যবাসী যেভাবে দু’হাত ভরে দিয়েছেন, এবার আমাদের প্রতিদান দেওয়ার পালা। মুখ্যমন্ত্রী সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন।”
সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলায় ইতিমধ্যে প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে অনেকটাই বাড়তি সুবিধা পেয়েছে তৃণমূল সরকার। তার সঙ্গে এসেছে বাড়তি দায়িত্বও। রাজ্যবাসী ভোটে যেভাবে মমতার আবেদনে সাড়া দিয়েছেন, তিনিও চাইছেন রাজ্যবাসীকে তার সুফল আরও বেশি পরিমাণে দিতে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মন্ত্রীদের অনেকেই ইতিমধ্যে কষে বুদ্ধি আঁটা শুরু করে দিয়েছেন। দফতরের কর্তারা তাদের মন্ত্রীদের থেকে পাওয়া সেই বুদ্ধি অনুযায়ী কাজও শুরু করে দিয়েছেন। উন্নয়ন দফতরের এক কর্তার কথায়, “ব্লু-প্রিণ্টের ড্রাফ্ট তৈরি হচ্ছে। বাজেটটুকু পেশ হয়ে অর্থ সঙ্কুলান পর্যন্ত অপেক্ষা। তার পরই শুরু হবে কাজ।”
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি-প্রতিদিন/১১ জুন, ২০১৬/মাহবুব