বাংলাদেশ থেকে পদ্মার ইলিশ আনতে এবার স্থলবন্দর পরিকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া শুরু করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। গত কয়েকবছর ধরেই পদ্মার ইলিশের সঙ্গে সম্পর্ক নেই রাজ্যের মানুষের। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই হাপিত্যেশ করে বাসে আছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। কিন্তুই কিছুই করার নেই। গতবছরের ফেব্রব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে তিস্তার পানি বণ্টন ও ইলিশ নিয়ে দুই নেত্রীর মধ্যে কথা হয়। এরপর গতকাল সোমবার নবান্নে মমতা ও দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলির সঙ্গে এক বৈঠকেও ইলিশ প্রসঙ্গটি উঠে আসে। পরে আলি নিজেই সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা নিশ্চয়ই ইলিশ মাছ আপনাদের কাছে রপ্তানি করবো, কেন করবো না? কিন্তু এখানকার বন্দরের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো প্রযোজন। কারণ ইলিশ মাছ ক্যারি করে আনতে আনতেই অর্ধেক মাছ নষ্ট হয়ে যায়। কাজেই সেটা করলেই রফতানি করা সম্ভব’।
বাংলাদেশি এই কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠকের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি সমস্যা কাটাতে পেট্রোপোল (পশ্চিমবঙ্গ) স্থলবন্দর ঘুরে দেখলেন এক প্রতিনিধি দল। এই দলে ছিলেন সীমান্ত লাগোয়া উত্তরচব্বিশ পরগনা জেলার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, প্রধান সচিব (স্বরাষ্ট্র) আর কে গুপ্তা, ল্যান্ড পোট্রেট ইন্ডিয়া’র চেয়ারম্যান ওয়াই এক্স সেরাওয়াত, বর্ডার ম্যানেজার সুনীল কুমার প্রমুখ। দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির বেশি অংশটাই হয়ে থাকে এই বন্দরের মাধ্যমে। তাই এদিন স্থলবন্দরের সমস্যা মেটাতে পেট্রাপোলের শুল্কদফতর, সুসংহত চেকপোস্ট এবং গোডাউন ঘুরে দেখার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও সারেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বৃহত্তম স্থলবন্দর হল পেট্রাপোল-বেনাপোল স্থলবন্দর। অথচ এই বন্দরের অবকাঠামো নিয়ে সমস্যা অনেকদিনের। আমদানি ঠিকমতো হলেও রপ্তানি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ কওে আসছেন স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং এজেন্ট ও রপ্তানি কারকরা। দীর্ঘ সময় পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলি সেন্ট্রাল পার্কিং-এ আটকে থাকে। পাশাপাশি পার্কিং এলাকায় শৌচাগার, ছাউনি, রাত্রিকালীন নিরাপত্তা ঢিলেঢালা থাকায় সমস্যায় পড়ছিলেন ট্রাক চালকরা। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের তরফেই অভিযোগও জমা পড়েছে। কিন্তু ও পর্যন্তই।
স্থলবন্দরের অবকাঠামো দেখার পরে জিরো সীমান্তে গিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক দফতেরর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও একদফা আলোচনা হয়। সেসময় দুই দেশেরম কর্মকর্তারাই পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচলের জন্য রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয়ে জোর দেন।
বিডি -প্রতিদিন/ ২১ জুন, ২০১৬/ আফরোজ