বাইরে প্রদর্শনের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ছবি পাঠানোর উপরে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্বভারতী। এবার কবির সৃষ্টি বেশ কিছু ছবি ফ্রেমমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তৃপক্ষ। ওই ছবিগুলি দীর্ঘদিন ধরে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বিশ্বভারতী এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ফ্রেমবন্দি ছবিগুলির কোন ক্ষতি হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। চলতি মাসের শেষেই রবীন্দ্রনাথের মোট ১৮০টি ছবি ফ্রেম থেকে খোলার কাজ শুরু হবে। দীর্ঘ কয়েক দশকের অপেক্ষার শেষে এরপর সেগুলি সাধারণের দেখার সুযোগ করে দিতে চান বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
রবীন্দ্র ভবনের অধ্যক্ষ তপতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিশ্বভারতীর বাইরে কোন ছবি যাবে না বলে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এবার সব ছবিগুলি ফ্রেম থেকে মুক্ত করা হবে। দীর্ঘদিন ধরেই সব ছবি ফ্রেমে বন্দি রয়েছে। তবে খোলা হলে বোঝা যাবে, ছবিগুলি কী পরিস্থিতিতে রয়েছে।’
কিন্তু কেন অকারণে ফ্রেমে বাঁধানো হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের ওই মূল ছবিগুলি? বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনাথের জন্মের দেড়শ' বছর উপলক্ষে ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট গোটা ভারত জুড়ে তার আঁকা ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। এজন্য দেশটির কেন্দ্রের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতী ১৮০টি ছবি তাদের হাতে তুলে দেয়। এর মধ্যে রবীন্দ্র ভবন থেকে দেওয়া হয় ১৭৪টি ছবি এবং কলাভবন থেকে দেওয়া হয় ৬টি ছবি।
হাতে পেয়েই গ্যালারি কর্তৃপক্ষ প্রদর্শনীর জন্য নিজেদের খরচে ওই ছবিগুলি ফ্রেমে বাঁধিয়ে ফেলে। প্রায় এক বছর ধরে ছবিগুলি বিদেশের বিভিন্ন শহরে প্রদর্শিত হয়। তখন অভিযোগ ওঠে, ফ্রেমবন্দি করায় চাক্ষুষভাবে রস গ্রহণের ক্ষেত্রে ছবিগুলির ‘বিশুদ্ধতা’ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সেগুলি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছিল।
২০১৩ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ফ্রেমবন্দি ছবিগুলি ফেরত পাঠায়। সেই থেকে ছবিগুলি বিশ্বভারতীর স্ট্রংরুমের মেঝেতে বিশেষভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। আর এইভাবে সংরক্ষণ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বভারতী আলোচনা চালাচ্ছিল। এরপরেই সিদ্ধান্ত হয়, সমস্ত ছবি ফ্রেম থেকে খোলা হবে।
সূত্র: এবেলা
বিডি প্রতিদিন/২১ আগস্ট ২০১৬/হিমেল-০৬