৫০০ ও ১০০০ রুপি নোট বাতিল নিয়ে ফের একবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি। ৫০০ ও ১০০০ নোট বাতিল করে মোদি সরকার দেশের মানুষকে ভিক্ষুক বানিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন মমতা। আগামীকাল বুধবার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করবেন মমতা। নোট বাতিলের ফলে সাধারণ মানুষকে যে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সেই কথাই তুলে ধরবেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার কলকাতা ছাড়ার আগে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বিমানবন্দরে মমতা বলেন, ‘নোট বাতিল ইস্যু নিয়ে আমি আগামীকাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবো। বৈঠকে আমার দলের ৪০ জন সংসদ সদস্যও থাকবেন। অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও কথা বলেছি। রাহুল গান্ধী, নীতিশ কুমার, নবীন পট্টনায়েক, মুলায়ম সিং যাদব, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। যদি তারা আমাদের সঙ্গে যেতে চায় তবে ভালো, না হলে আমি আমার দলের সংসদ সদস্যদের নিয়েই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবো’।
নোট বাতিলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, ‘এমন হাজার হাজার জায়গা আছে যেখানে কোন ব্যাংক কিংবা পোস্ট অফিসের সুবিধা নেই। সেখানকার মানুষ কি করবে? নোট বাতিলের ফলে দেশের মানুষ এখন ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে’।
এর আগে এদিন সকালে ট্যুইট করেও মোদি সরকারকে এক হাত নেন মমতা। মঙ্গলবার থেকেই একই ব্যক্তির বারবার নোট বদল ঠেকাতে, ভোটের মতো গ্রাহকদের আঙুলেও কালির দাগ লাগিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। সেই বিষয়টিকে ‘কালো প্রক্রিয়া’ বলে আখ্যায়িত করে মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার মানুষকে অবিশ্বাস করে বলেই ওই কালি লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে’। তৃণমূল প্রধান আরও জানান, 'আগামী ১৯ নভেম্বর রাজ্যে একাধিক জায়গায় উপনির্বাচন রয়েছে। তার আগে ভোটারদে হাতে কালির দাগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কি বলবে?'
এদিকে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর কোন স্থগিতাদেশ দেননি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তবে নোট বাতিল হওয়ার পর ব্যাংক ও এটিএম বুথগুলিতে সাধারণ মানুষকে যে হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে তা দূর করতে সরকার ঠিক কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা হলফনামা দিয়ে আদালতে জানাতে বলেছেন শীর্ষ আদালত। গত ৮ নভেম্বর মধ্যরাত থেকেই এই নোট দুইটি বাতিলের কথা ঘোষণা করে মোদি সরকার। এর পরই সাধারণ মানুষের হয়রানির অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের বিশেষ বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ‘নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের ওপর আমরা কোন স্থগিতাদেশ জারি করবো না’।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ