২০০৫ সালে ভারতের হায়দরাবাদে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ মামলায় এক বাংলাদেশিসহ ১০ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন দেশটির স্থানীয় এক আদালত।
১১ বছর আগে ওই আত্মঘাতী হামলায় এক হোমগার্ডের মৃত্যু হয়। এছাড়া গুরুতর আহত হয় হায়দরাবাদ পুলিশের টাস্ক ফোর্সের এক কনস্টেবল।
অভিযুক্ত ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে কোন উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে না পারায় বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদ মেট্রোপলিটন সেশন আদালতের বিচারক টি. শ্রীনিবাস রাও ওই বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত প্রত্যেককেই এই মামলা থেকে খালাস দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবদুল আজিম জানান, কোন উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই পুলিশ ওই ১০ জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ জমা দিতে না পারায় আদালত তাদের এই মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে একজন জামিনে মুক্ত হলেও, বাকিরা এখনও কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১২ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ ভারতের হায়দরাবাদের বেগমপেট এলাকায় ওই আত্মঘাতী বিস্ফোরণটি হয়। বিস্ফোরণের মূলহোতা ছিলেন ডালিন নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক। ওইদিন সন্ধ্যায় বেগমপেটে হায়দরাবাদ পুলিশের টাস্ক ফোর্সের কার্যালয়ে ব্যাকপ্যাক (পিছনে বড় ব্যাগ) নিয়ে প্রবেশের সময় ডালিনকে বাধা দেয় অফিসের নিরাপত্তারক্ষী (হোমগার্ড) সত্যনারায়ন। এরপরই সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয় ডালিন। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় সত্যনারায়নেরও। এসময় গুরুতর আহত হয় ভেঙ্কট রাও নামে এক কনস্টেবল।
এরপর বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা হয়। তদন্তে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি) জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসে।
জানা যায়, স্থানীয় জঙ্গিদের সহায়তায় ওই বিস্ফোরণটি ঘটায় হুজি। এরপর ওই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ২০ জনকে চিহ্নিত করে পুলিশ। পরে হায়দরাবাদের ওল্ড সিটি এলাকায় একটি বাড়ি থেকে আরডিএক্স বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এরই মধ্যে পুলিশ জানতে পারে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত এম শাহেদ ওরফে বিলাল, গুলাম ইয়াজদানিসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি পাকিস্তান ও বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। যদিও সেই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তারা নিহত হয় বলেও জানতে পারে এসআইটি।
শেষে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি নাগরিক হালালউদ্দিন এবং এম.এ হাজি, আবদুল কালিম, শাকিল, সৈয়দ হাজি, এ.এ.খান, আজমথ আলি, মেহমুদ বারুওয়ালা, এস.এ.খাজা ও নাফিসের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় এসআইটি। তবে সেই চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় ওই ১০ জনকে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত।
বিডি প্রতিদিন/১০ আগস্ট ২০১৭/আরাফাত