লাতিন আমেরিকার 'সুইসাইড গেম' মোমো আতঙ্কে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। ইতোমধ্যে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিংয়ে। এবার সেই আতঙ্ক ভর করেছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। সেখানে এক কলেজ ছাত্রের মোবাইলে এসেছে মারণগেমের লিংক। নম্বরটি যথারীতি অচেনা। গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল। অভিমান করে হোয়াটসঅ্যাপে স্টেটাস দিয়েছিলেন, ‘আমি মরে যাব।' এরপরই অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ আসতে শুরু করে জলপাইগুড়ির এক কলেজ ছাত্রী কবিতা রায়ের মোবাইলে। কবিতার দাবি, মেসেজ তাকে অনলাইন গেম মোমো চ্যালেঞ্জ খেলার আহ্বান জানানো হয়। ভয় পেয়ে যান ওই ছাত্রী। দাদার পরামর্শে যে নম্বর থেকে মেসেজ আসছিল, সেই নম্বরটি ব্লক করে দেন তিনি। অভিযোগ জানানো হয় থানায়। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি মোমো আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে জেলা পুলিশের সাইবার সেল। তদন্তকারীদের দাবি, মজাচ্ছলেই বন্ধু ও পরিচিতদের মোবাইলে মোমো গেমের নাম করে একটি লিংক পাঠিয়েছিল সে। এদিকে আবার দার্জিলিংয়ে কার্শিয়াংয়ে এক কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যুতে মোমো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মৃতের পরিবারের দাবি, মারণ গেমের নেশায় নাকি সে আত্মহত্যা করেছে। আর এবার মারণ গেমের লিংক দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের এক কলেজের ছাত্রের মোবাইলেও।
ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের রামপুরের বাসিন্দা আরিফ সরকার। বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র তিনি। শুক্রবার সকালে এক অজানা নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসে। আরিফ সরকারের দাবি, যিনি মেসেজ পাঠিয়েছেন, তিনি নিজেকে মোমো বলে পরিচয় দেন। আগামীতে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান মেসেজ প্রেরক। প্রথমে বিষয়টি তেমন আমল দেননি ওই কলেজ শিক্ষার্থী। ভেবেছিলেন, কোনও বন্ধু হয়তো মজা করছে।এরপরই আরিফের এক বন্ধু ‘মোমো চ্যালেঞ্জ’ নিয়ে তাঁকে সচেতনতামূলক একটি ভিডিও পাঠান। তাতে হুঁশ ফেরে। ওই নম্বরটি ব্লক করে শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন আরিফ সরকার। তবে আতঙ্ক কাটেনি ওই যুবকের। শুধু রাজ্যের উত্তরবঙ্গেই নয়, মোমো আতঙ্ক ছড়িয়েছে দক্ষিণবঙ্গেও। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের এক কিশোর মারণগেম রীতিমতো আসক্ত হয়ে পড়েছিল বলে জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে ফেরাতে সক্ষম হয়।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ আগস্ট, ২০১৮/মাহবুব