৯ মার্চ, ২০২০ ১৫:৫৮

পশ্চিমবঙ্গে রবিচ্ছায়ার রবীন্দ্র উৎসব

অনলাইন ডেস্ক

পশ্চিমবঙ্গে রবিচ্ছায়ার রবীন্দ্র উৎসব

সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত হয় রবিচ্ছায়া-র রবীন্দ্র উৎসব ২০২০-র সূচনা পর্ব। রবীন্দ্র ভাবধারাকে জনমানসের প্রতিটি স্তরে প্রোথিত করাই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। যার শুরু ২০১৯ এ। 

এই ভাবনার প্রকাশ "নগর গ্রামে ঋতু নামে" রবীন্দ্র গান ও কবিতার সংকলনে নৃত্য গীতি আলেখ্য, যার মূল কলা কুশলী তথা কথিত সভ্য সমাজে ব্রাত্য রূপান্তর কামি শিল্পীরা। শুধুমাত্র সংস্কৃতি চর্চায় নয়, সমাজের বিভিন্ন আঙ্গিকে রবীন্দ্র ভাবধারা কতটা প্রাসঙ্গিক, কতটা তাৎপর্য পূর্ণ তাকে স্মরণ করা বর্ষব্যাপী এই উৎসবের অন্যতম প্রধান কারণ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ থেকে আগত "বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা" এর মোট চল্লিশজন শিল্পীর কণ্ঠে সম্মেলক গান উৎসবের বাতাবরণ সুনির্মিত করে। প্রথমে গীত হয় বাংলাদেশ এর জাতীয় সংগীত ও তারপরে 'ওই মহামানব আসে'। অত্যন্ত পরিশীলিত  নিবেদন।

রবিচ্ছায়া- র বহু প্রশংসিত ও বহু চর্চিত মঞ্চ উপস্থাপনা 'নগর গ্রামে ঋতু নামে'- র নির্বাচিত কিছু অংশ এদিন পরিবেশিত হয়। তারমধ্যে শরতের বর্ণনায় বাংলাদেশ-র প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী তপন মাহমুদ এবং পশ্চিম বঙ্গের শিল্পী সুদেষ্ণা সান্যাল রুদ্র-র দ্বৈত কণ্ঠে অমল ধবল পালে লেগেছে, এই সন্ধ্যার সেরা প্রাপ্তি। এই গানে রূপান্তর কামি শিল্পীর নৃত্য নির্মাণ ও একইসঙ্গে মঞ্চে সাদা ক্যানভাসে রং আর তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয় শরতের আবহ। সব মিলিয়ে এই প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে। বিশেষ ভাবে তাৎপর্য পূর্ণ যে বিষয়টি তা হলো রূপান্তর কামি এবং সাধারণ শিল্পীদের একই সঙ্গে মঞ্চ উপস্থাপন।

আমি পথ ভোলা এক পথিক গানটির সঙ্গে রূপান্তরকামী শিল্পীর সঙ্গে সাধারণ দুই শিল্পীর নৃত্য নির্মাণ অনবদ্য।

'নগর গ্রামে ঋতু নামে'- র পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সুদেষ্ণা সান্যাল রুদ্র ও রিমা পাল। 

শ্রাবনী সেন, মনোময় ভট্টাচার্য,পূবালী দেবনাথ- এর গান মনে গভীর রেখা পাত করে।

বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী তপন মাহমুদের নিবেদন উপস্থিত শ্রোতাদের মন্ত্র মুগ্ধ করে। আমিনা আহমেদ, খৈরুজ্জামান কাইয়ূম, পীযূষ বরুয়া, তানজিনা তমা, সাগরিকা জামালি, জয়ন্ত আচার্য- র গান মনে দাগ কাটে।

রবীন্দ্র গানের সংকলনে বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থার শিল্পীবৃন্দ পরিবেশিত সম্মেলক গানে ছয় ঋতুর বর্ণনা এক কথায় অসাধারণ। গানগুলি সুনির্বাচিত ও সু-চর্চিত।

এই অনুষ্ঠানে রূপান্তর কামি দুই বর্ষীয়ান শিল্পী মনোরমা দাস এবং ভানু নষ্কর কে রবিচ্ছায়ার পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হয়। এই বর্ষীয়ান দুই শিল্পীকে সম্মানিত করা প্রকৃত অর্থে এই উৎসবের অঙ্গীকার পূরণ।

শুধুমাত্র সংস্কৃতি চর্চা নয়। রূপান্তর কামি শিল্পীদের সমাজের মূল স্রোতে ভাসিয়ে দিতে এদের হাতে তৈরি বিভিন্ন গয়নার প্রদর্শনীও করা হয় প্রেক্ষাগৃহে।

বাংলাদেশ থেকে আগত চল্লিশজন শিল্পীকে এদের হাতে তৈরি গয়না দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।

সমস্ত অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় অন্তরা দাস নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখেন। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর