আসামের গুয়াহাটিতে শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে 'মিঞা মিউজিয়াম' স্থাপন নিয়ে বিতর্ক এখনও অব্যাহত। ইতিমধ্যেই সেখানে মুসলিমদের জন্য এই মিউজিয়াম নির্মাণ করা হবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যটির অর্থ ও শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে ওই
মিউজিয়ামের প্রস্তাবনা দেওয়া বারপেটা জেলার বাঘবার কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক (এমএলএ) শেরমান আলি আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিলেন হিমন্ত। গতকাল শনিবার (৩১ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন থেকে হিমন্ত বলেন ‘কলাক্ষেত্রে নীল লঙের লুঙ্গি রাখার কথা বলে শেরমান আলি আসমিয়াদের চূড়ান্ত অপমান করেছেন। তিনি নিজে নিচু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
বিজেপির সিনিয়র নেতা আরও বলেন, চর চাপরি অঞ্চলের মৎসজীবীদের জীবিকার জন্য ব্যবহৃত জাকি, জাল, নৌকা, গান, নদী তীরবর্তী সংস্কৃতি ইত্যাদি সংরক্ষণের কথা বললে কোন আপত্তি ছিল না। কিন্তু কলাক্ষেত্রে লুঙ্গির কথা বলে গুরুস্থলকে অপমান করা হয়েছে। এই অপমানজনক মন্তব্য কিছুতেই সহ্য করা হবে না।
এসময় তার হুঁশিয়ারি, মিঞা মিউজিয়াম স্থাপনের নামে লুঙ্গি রাখার কথা বলা কংগ্রেস বিধায়কের উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে কারাগার। তিনি যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চেয়ে নেন, তবে ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে। আমি আসমের মানুষের কাছে এই অঙ্গীকার করছি।
তবে আগামী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করা হবে কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে হিমন্ত বিশ্ব জানান, আমরা যদি এখনই শেরমান আলিকে কারাগারে পাঠাই, তবে বিধানসভার নির্বাচনে তার ভোট বাড়বে। তাই আমরা তাকে এই সুবিধা দিতে চাই না।
উল্লেখ্য উত্তর-পূর্ব অসমের নদী তীরবর্তী অঞ্চল 'চর-চাপরি'-তে বসবাসকারী মুসলিমদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য গুয়াহাটির পাঞ্জাবাড়িতে অবস্থিত সাংস্কৃতিক ভবন 'শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্র' চত্বরে একটি মিউজিয়াম (সংগ্রহশালা) গড়ার জন্য সম্প্রতি প্রস্তাব দিয়েছিলেন শারমান আলি আহমেদ। কার্যত এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।
কিন্তু বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধি শরমান আলির ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সেসময় জানিয়েছিলেন, আমার জানা মতে অসমের চর-চাপরিতে বসবাসকারী মানুষদের কোন আলাদা পরিচয় বা সংস্কৃতি নেই কারণ সেখানকার অধিকাংশ মানুষই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এখানে এসেছিল। শ্রীমন্ত শংকরদেব কলাক্ষেত্র আসমীয়া সংস্কৃতির প্রতীক। স্পষ্টতই আমরা কোনভাবেই এর বিকৃতি ঘটাতে পারবো না। আমরা দুঃখিত, এমএলএ সাহেব।
উল্লেখ্য, আসামে প্রায় ১ কোটি মুসলিমের বাস। এর মধ্যে বাঙালি মুসলিমের সংখ্যা প্রায় ৬৪ লাখ। চর-চাপরি অঞ্চলে বাস করে আনুমানিক ২৫ লাখ মুসলিম।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ