কড়া নিরাপত্তা সত্বেও বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্য দিয়ে শেষ হলো কলকাতা পৌরসভা নির্বাচন। রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় কলকাতা পৌরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ। এই ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে মোতায়েন করা হয় ২৩ হাজার ৫০০ রাজ্য পুলিশ।
কিন্তু তা সত্ত্বেও একধিক বুথে দফায় দফায় উত্তেজনা, কোথাও সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকা, কোথাও বুথের মধ্যে বিরোধীদলের এজেন্টকে বসতে না দেয়া, বুথের বাইরে বোমা ছোড়া, ইভিএম বিকৃতি করা, ভোটারদের প্রভাবিত করা সহ একাধিক অভিযোগ উঠলো শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও সেই সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে।
এদিন সকাল ৭টা থেকেই শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কলকাতা পৌরসভার ১৪৪ টি ওয়ার্ডে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিলেন ৯৫০ জন। সবচেয়ে বেশি প্রার্থী নির্দলীয়। ৩৭৮ জন। দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী তৃণমূলের। ১৪৪টি আসনের প্রত্যেকটিতেই প্রার্থী দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। বিজেপি-র প্রার্থী ১৪২ জন। বামেরা লড়েছে ১২৮ আসনে। কংগ্রেসের প্রার্থী ১২১ জন। অন্যান্য দলের প্রার্থী ছিলেন ৩৬ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৪০ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫৭ জন।
এদিন বিকেলে মিত্র ইনস্টিটিউশন ভোটদান করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এর আগে ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন মমতার ভাতিজা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি।
ভোট দিয়ে মমতা বলেন "উৎসবের মতো ভোট হচ্ছে। আমি খুশি যে মানুষ শান্তিতে ভোট দিচ্ছেন। আমরা এটাই চাই।" আমরা এটাই চেয়েছিলাম।
পরে কলকাতা পৌরভোটে অশান্তি ও সহিংসতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মমতা জানান "প্রতিযোগিতায় না পেরে নাটক সাজানো হচ্ছে। তার স্পষ্ট বক্তব্য বিরোধীদের অভিযোগের কোনো গুরুত্ব নেই, তাই এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।"
অন্যদিকে অশান্তি প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের কর্মীদের অভিষেক জানান, আপনাদের কাছে কোন সহিংসতার ফুটেজ ভিডিও থাকলে তা প্রকাশ্যে আনুন। যদি এটা প্রমাণিত হয় যে তৃণমূল কোথাও যুক্ত আছে তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন অভিষেক।
এদিকে অসুস্থতার কারণে ভোট দিতে পারেননি রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। যদিও তার স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য এবং মেয়ে সুচেতনা ভট্টাচার্য দুজনেই ভোট দিয়েছেন।
কলকাতা পৌরসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর। ওই দিনই জানা যাবে লাল বাড়ির (কলকাতা পৌরসভা ভবন) দখল কার হাতে থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন