অবৈধ অনুপ্রবেশ কিংবা অন্য কোনো কারণে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক ও পরে আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি রয়েছেন বহু বিদেশি। কিন্তু সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ বিদেশি নাগরিকদের সে দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সেই সমস্ত বিদেশি বন্দিদের সমস্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকেই।
এক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশিসহ বিদেশি নাগরিকদের পরিবার বা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কিংবা ভারত সরকারের সাথে কোনো যোগাযোগ করা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের কারা দফতরের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সদুত্তর আসেনি।
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের কারাগারগুলোতে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ কয়েক শতাধিক বিদেশি নাগরিকদের নিয়ে ঘোরতর বিপাকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় এ কথা স্পষ্টতই স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি।
বাংলাদেশিসহ কতজন বিদেশি বন্দি জেল খাটার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও এখনো কারাগারে বন্দি আছেন? বিধানসভার অধিবেশনে এমন একটি প্রশ্ন তোলেন মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক ইদ্রিস আলী।
সেই প্রশ্নের উত্তরে কারামন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে ৩১ মার্চ ২০২৩ সাপেক্ষে ২৭,৭৫২ জন বন্দি আছে। তাদের মধ্যে বিদেশি বন্দির সংখ্যা ২,০৮৪ জন। কারাগারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও রাজ্যের কারাগারে অবস্থান করছেন ১৬০ জন বিদেশি নাগরিক।’ এদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি বন্দি বলে জানা গেছে।
এসময় ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ইদ্রিস আলী ফের প্রশ্ন করেন, ‘কারাগারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বিদেশি বন্দিদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সরকারের কি পরিকল্পনা রয়েছে কি না।’
সেই প্রশ্নের উত্তরে কারামন্ত্রী বলেন, ‘উক্ত মেয়াদ শেষ হওয়া বিদেশি বন্দিদের পরিবার বা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করছে না বলেই আমরা উক্ত জেল খাটার মেয়াদ শেষ হওয়া বন্দিদের দেশে পাঠাতে পারছি না। সংশ্লিষ্ট দেশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলেই আমরা তাদের নিজের দেশে পাঠাবার ব্যবস্থা করবো।’
এ বিষয়ে এদিন গণমাধ্যমের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলী।
বিডি প্রতিদিন/এমআই