প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ট্যাবলেট জাতীয় ওষুধ আবিষ্কারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ব্রিটেন। এ ট্যাবলেটের মাধ্যমে হালকা করোনা আক্রান্তরা বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিতে পারবেন এবং গুরুতর অসুস্থতা ও হাসপাতালের চিকিৎসা এড়ানো সম্ভব হবে। সূত্র : বিবিসি, গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফের।
আসন্ন শরৎকালের মধ্যে এমন অন্তত দুটি ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আবিষ্কারের জন্য টাস্কফোর্স গঠন করেছে ব্রিটিশ সরকার। এটি আবিষ্কার হলে করোনা থেকে পুনরুদ্ধারের গতি বাড়িয়ে তুলতে পারে। গত মঙ্গলবার ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেন, এ পরিকল্পনা একটি নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অংশ। কারণ বেশির ভাগ বিজ্ঞানীর মতে এ বছর যে কোনো সময় ব্রিটেনে করোনার আরেকটি ঢেউ আঘাত হানতে পারে। বরিস জনসন বলেন, এ অ্যান্টিভাইরাল গবেষণা করোনার নতুন ধরনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি অপ্রত্যাশিত তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সহযোগিতা করবে। ব্রিটিশ সরকার আশা করছে অ্যান্টিভাইরাল টাস্কফোর্স ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের মতোই সফল হবে। তাদের লক্ষ্য নতুন ধরনসহ করোনার একটি ওষুধ খুঁজে পাওয়া। বরিস জনসন বলেন, ‘আমাদের অ্যান্টিভাইরাল টাস্কফোর্স বিস্ময়কর চিকিৎসার সন্ধান করছে। এর মাধ্যমে আপনি বাড়িতে বসেই করোনাভাইরাসকে থামিয়ে দিতে পারেন। এটি করোনা সংক্রমণ ঠেকাবে এবং জীবন বাঁচাবে।’ ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, তিনি ব্রিটেনকে বুস্টিং করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন টাস্কফোর্স করোনা প্রতিরোধ উন্নতিতে সাহায্য করবে। ডেক্সামেথাসন এবং হাসপাতালের ড্রাগ টিসিলিজুমাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনার চিকিৎসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্রিটেন। দারুণ টিকাদান কর্মসূচি ও ওষুধ করোনা প্রতিরোধে ও আমাদের প্রিয়জনদের বাঁচাতে ব্যতিক্রমী অস্ত্র হিসেবে কাজ করছে।’ হ্যানকক বলেন, ‘ভ্যাকসিন ও থেরাপিস্ট টাস্কফোর্সের সফলতার মতো আমাদের অসাধারণ নতুন টাস্কফোর্স সফল হবে এবং শরৎকালের মধ্যেই অ্যান্টিভাইরাল ট্রিটমেন্টের সন্ধান পাবে।’
করোনার ভারতীয় ধরন রুখতে ফাইজারের ভ্যাকসিন কার্যকর : করোনার ভারতীয় ধরনের ফাইজারের ভ্যাকসিন বেশ কার্যকর বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। স¤প্রতি বিভিন্ন দেশ থেকে ইসরায়েলে ফেরত আটজনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়। গতকাল ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল হেজি লেভি জানিয়েছেন, করোনার ভারতীয় ধরন রুখতে ফাইজারের ভ্যাকসিন কাজ করছে। সূত্র : রয়টার্স। তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, করোনার এই ধরনটি মোকাবিলায় ফাইজারের টিকার কার্যকারিতা খানিকটা হলেও হ্রাস পাচ্ছে। অবশ্য সরকারিভাবে এখনো কিছু ঘোষণা করা হয়নি। করোনার অতিসংক্রামক ব্রিটেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেইনের পর বিশ্বজুড়ে এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ভারতীয় স্ট্রেইন। ভারতে প্রথমে চিহ্নিত হওয়ায় এই করোনা স্ট্রেইনটি নিয়ে গবেষণা চলছে ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডেও। অ্যাস্ট্রাজেনেকাসহ বেশকিছু সংস্থার ভ্যাকসিন ভারতীয় স্ট্রেইনে খুব একটা কার্যকরী নয় বলে আগেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাই লেভির আশ্বাসে নতুন আশা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের ৯৩ লাখ মানুষের মধ্যে ৮১ শতাংশ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। দেশটিতে সংক্রমণও বেশ নিয়ন্ত্রণেই।