রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে ইউক্রেন প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন, দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার এক শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার পর এ কথা বলেন তিনি।
তবে এ প্রস্তাবে রাশিয়াকে অত্যধিক ছাড় দেওয়া হচ্ছে অভিহিত করে ইউরোপীয় মিত্ররা কড়া আপত্তি জানিয়েছে। তারা বলছে, পরিকল্পনার দোনবাস, ক্রিমিয়া ও সেনা সীমাবদ্ধতার মতো শর্তগুলো ‘আত্মসমর্পণের সমান’।
ওয়াশিংটনের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ইউক্রেনকে দোনবাস অঞ্চল পুরোপুরি ছেড়ে দিয়ে সামরিক শক্তি ব্যাপকভাবে কমাতে হবে। যার আওতায় কিয়েভকে ৬ লাখ পর্যন্ত সেনা সীমিত রাখতে হবে। ফলশ্রুতিতে তাদেরকে নিরপত্তা গ্যারান্টি দেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ক্রিমিয়া, লুহানস্ক ও দোনেতস্ককে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার হিসেবে স্বীকার করবে। ইউক্রেনকে দোনেতস্ক থেকে সেনাদের সরাতে হবে।
এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, জেলেনস্কির প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের সদস্য রুস্তেম উমেরভ-এর সঙ্গে আলোচনার পর এ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। উমেরভ নিজেই মূল পরিকল্পনার বেশির ভাগের সঙ্গে সম্মত হয়েছেন। সেই সঙ্গে কিছু পরিবর্তন করে তিনি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছে উপস্থাপন করেছেন।
খসড়া পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ন্যাটোর একজন সেনাও ইউক্রেনে থাকবে না। একই সঙ্গে কিয়েভ কখনও ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না।
অন্যদিকে রাশিয়াকে আবার জি-৮ জোটে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশটির ওপর ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে পুনরায় যুক্ত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর সঙ্গে একটি চুক্তি করবে যেখানে জ্বালানি, প্রাকৃতিক সম্পদ, অবকাঠামো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ থাকবে।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, পরিকল্পনার একটি খসড়া পেয়েছেন, যুদ্ধ শেষ করতে ইউক্রেন ও ওয়াশিংটন একসঙ্গে পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করবে। টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার পয়েন্টগুলো নিয়ে ইউক্রেনের সংশ্লিষ্ট দলগুলো কাজ করবে। 'আমরা গঠনমূলক, সৎ ও দ্রুত কাজ করার জন্য প্রস্তুত।'
জেলেনস্কির কার্যালয় ২৮-পয়েন্টের খসড়া পরিকল্পনার সরাসরি বিষয়বস্তু সম্পর্কে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি। তবে জানিয়েছে, পরিকল্পনায় জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক নীতিমালা তুলে ধরা হয়েছে।
কার্যালয় আরও জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আশা করছেন, কয়েক দিনের মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক সুযোগ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় মূল বিষয়গুলো নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হবে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারোলিন লেভিট সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রাষ্ট্রদূত মার্কো রুবিও ও মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ প্রায় এক মাস ধরে গোপনে এই পরিকল্পনার ওপর কাজ করছেন।
সূত্র: রয়টার্স
বিডি-প্রতিদিন/এমই