সারা দেশে আম উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে উত্তরের জেলা নওগাঁ। মাটি ও জলবায়ুর বিশেষত্বের কারণে স্বাদে অতুলনীয় বরেন্দ্র অধ্যুষিত এ অঞ্চলের আম। অন্য জেলাগুলোতে যখন আমের মৌসুম শেষের পথে তখনো এখানে প্রচুর পরিমাণে আম্রপালি আম পাওয়া যাচ্ছে। একে ভাগ্য বদলের চাবিকাঠি হিসেবে নিয়েছেন স্থানীয় আম চাষিরা।
দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে এ আম চাষিদের ভাগ্যের দুয়ার আগেভাগেই খুলে গেছে। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে জেলার সবকটি বাজারে সরবরাহ কমিয়ে এবার প্রতি মণ আমের দাম অন্তত ১ হাজার টাকা বাড়িয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। এতে বেশ লাভবান হচ্ছেন তারা। আম চাষিরা বলছেন, শেষ সময়ে আম্রপালি সবচেয়ে বেশি চাষ হয় এ জেলায়। মৌসুমের শুরুর চেয়ে আগস্টে দ্বিগুণ দামে এ আম বিক্রি হয়। কারফিউয়ের মধ্যে এবার আগস্টের আগেই দ্বিগুণ দামে আম বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন কারফিউ শেষ হলেও আর দাম কমবে না। এতে গত বছরের চেয়ে এ বছর আরও বেশি দামে আম বিক্রি করা যাবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাটে কমেছে আমের সরবরাহ। মানভেদে প্রতি মণ আম্রপালি আম ৪০০০-৬৫০০ টাকা, বারি-৪-এর ৩৫০০-৪৫০০ টাকা, ব্যানানা ম্যাংগো ৬০০০- ৭০০০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। গত শুক্রবার হাটে মানভেদে প্রতি মণ আম্রপালি আম ৩৩০০-৪০০০ টাকা, বারি-৪-এর ২২০০-৩০০০ টাকা এবং ব্যানানা ম্যাংগো ৪৫০০-৫২০০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছিল। আম বিক্রি করতে আসা চাষিরা বলেন, ১০ মণ আম্রপালি বিক্রি করতে এসেছিলাম। বাজারে এসে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ৫ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলাম। এ একই আম চার দিন আগেও ৩ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। দাম বেশি পেয়ে ভালো লাগছে। কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, এ বছর জেলার ১১টি উপজেলায় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম্রপালি, নাক ফজলি, ফজলি, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙা, ক্ষীরশাপাত, বারি-৪, ব্যানানা ম্যাংগোসহ দেশি-বিদেশি ১৬টি জাতের আম চাষ করেন চাষিরা। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে আম্রপালি। এ মৌসুমে জেলায় আম্রপালি আমের বাগানের পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর। ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি থেকে এ মৌসুমে ৪ লাখ ২৪ হাজার ২০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিরাপদ আম উৎপাদনে আগ্রহ বাড়াতে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় চাষিদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। যার ফলস্বরূপ এখন নওগাঁর আম দেশ সেরা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। বাজারে চাহিদা বেড়েছে এ আমের।