ফিলিস্তিনের গাজায় ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। প্রথম দফার এই যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল ১ হাজার ফিলিস্তিনি যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। বিনিময়ে স্বাধীনতাকামী হামাস গেরিলারা ৩৩ জন ইসরায়েলি যুদ্ধবন্দিকে ছেড়ে দেবে। এ ছাড়া গাজার বিভিন্ন স্থান থেকে সেনা প্রত্যাহারেও সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা নৃশংস সহিংসতার পর উভয় পক্ষ কাতারের মধ্যস্ততায় দোহায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। সূত্র : বিবিসি।
খবরে বলা হয়, আলোচনার মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার গতকাল জানিয়েছে, তারা এখন একটি ‘চুক্তির কাছাকাছি’ অবস্থায় পৌঁছেছে। ইসরায়েল ও হামাস চুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আলোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ১৫ মাসের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা একই ভবনে অবস্থান করে আট ঘণ্টা ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও মুখোমুখি নয়, তদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে পরোক্ষভাবে। কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছেন।
এদিকে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, আলোচনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। তারা আশা করছেন, এই দফার আলোচনায় ‘পরিষ্কার ও বিস্তারিত একটি চুক্তিতে’ উপনীত হবে। এখনো পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে। এগুলোর বিস্তারিত নিয়ে এখন দরকষাকষি চলছে। যুদ্ধবিরতির সমঝোতা সম্পর্কে আরেক খবরে বলা হয়, উভয় পক্ষ একমত হয়েছে যে, প্রথম দিন হামাস তিন জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। অন্যদিকে জনবহুল এলাকাগুলো থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে শুরু করবে ইসরায়েল। সাত দিন পরে হামাস আরও চারজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। সে অনুযায়ী গাজার দক্ষিণ এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষজনকে উত্তরের এলাকায় ফেরার সুযোগ দেবে ইসরায়েল। তাদের উপকূলীয় সড়ক ধরে হেঁটে ফিরতে হবে। সালাহ-আল-দিন সড়ক দিয়ে গাড়ি, পশুচালিত যানবাহন ও ট্রাক চলাচল করতে দেওয়া হবে। কাতার ও মিসরের কারিগরি নিরাপত্তা বাহিনী পরিচালিত একটি এক্সরে মেশিনের মধ্য দিয়ে এগুলোকে যেতে হবে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম দফায় ৪২ দিনের জন্য ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরায়েলি সৈন্যরা অবস্থান করে উত্তর আর দক্ষিণ সীমান্তের মধ্যে ৮০০ মিটার লম্বা একটি বাফার জোন নিয়ন্ত্রণ করবে। সেই সঙ্গে ইসরায়েল ১ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৯০ জন রয়েছে, যারা ১৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কারাভোগ করেছেন। বিনিময়ে হামাস ৩৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর পর চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় নিয়ে আলোচনা করতে যুদ্ধবিরতির ১৬তম দিনে আবার বৈঠকে বসবেন আলোচকরা। এদিকে আলোচনার অগ্রগতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের উভয়েই কৃতিত্ব দাবি করেছেন।