‘ঘরে বাইরের কেউ ঢুকলেই বলি দিয়ে ফেলবে। বাকিটা আমি দেখব। চিন্তার কিছু নেই।’ এমন কথা বলে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অরূপ চক্রবর্তী। বাঁকুড়া জেলায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তার এসব কথার ফুটেজ গতকাল মঙ্গলবার একটি বাংলা টিভি চ্যানেলের খবরে প্রচার করা হয়।
তৃণমূলের আরেক নেতা টালিউড তারকা তাপস পালের নারীদের নিয়ে করা আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রচণ্ড তোলপাড় চলছে, এ সময় দলের আরেক নেতা অরূপ এমন বেফাঁস মন্তব্য করলেন। গতকাল এনডিটিভি ও জিনিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। অরূপ দাবি করেন, তিনি আত্মরক্ষার্থে এ কথা বলেছেন।
অরূপ বলেন, মানুদিহ গ্রামে সম্প্রতি বিজেপির কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূলের স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সেখানে গিয়ে কর্মীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমার এই বক্তব্য কেন সমস্যার সৃষ্টি করবে? আমি আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে কথা বলেছি। যদি কেউ আমার বাড়িতে হামলা করে, অথবা বাড়ির মেয়েদের জোর করে তুলে নিয়ে যায়, তাহলে কি একজন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করব? আমি কি নিজেকে রক্ষার জন্য আমার অধিকার প্রয়োগ করব না?’
তৃণমূলের এই নেতা বলেন, ‘আমি বলেছি, যদি কেউ তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে রায়ট করতে আসে, তাহলে তার আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। সেই বহিরাগতকে হত্যা করার অধিকার তার রয়েছে।’
এদিকে নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তাপস পালের সাংসদ পদ বাতিলের দাবি উঠেছে। তাকে গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন। চন্দননগরের বাড়ির সামনে তার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন থানায় তাপসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিজেপি, বামফ্রন্ট ও বিভিন্ন নারী সংগঠন। আজ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করছেন কৃষ্ণনগরের আইনজীবী শমীক সান্যাল।
এর আগে পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূলের প্রধান অনুব্রত মণ্ডল। এর আগের দিন তিনি তার কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘বিরোধীদের বাড়িঘরে আক্রমণ চালাও। আর পুলিশ তাদের বাঁচাতে এলে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা হামলা করো।’