‘কুসংস্কার’ প্রচলন রয়েছে যুগ যুগ ধরে। এর ব্যাপকতা এখনও রয়েছে। কোন লক্ষ্মনে কী হয়, কোন কাজ করলে কী হয়- মুরুব্বিরা এখনও সাবধান করে দেন। এই অতি প্রচলিত শব্দটির নানা ধরনের ব্যাখ্যা হতে পারে।
এই অতি প্রচলিত কিছু ‘কুসংস্কার’ হলো—
মরা গাছে কাক ডাকা : অনেকে মনে করেন মরা গাছে কাক ডাকলে নাকি কারো মৃত্যু সংবাদ আসে। এ ধারণায় বিশ্বাসীরা সঙ্গে সঙ্গে কাক তাড়াতে নেমে পড়েন। কিন্তু কাক তাড়িয়ে মৃত্যুর সংবাদকে কতটা দূরে সরিয়ে রাখা যায়!
শেষ রাতে শিয়াল ডাকা : কাক ডাকা দুঃসংবাদের হলেও শেষ রাতের শিয়ালের ডাককে আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়। কারণ শেষ রাতে শিয়ালের ডাক ফসলের ভাল মূল্য পাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
গভীর রাতে পেঁচার ডাক : পেঁচা তো রাতেই ডাকবে! তারপরও গভীর রাতে পেঁচার ডাককে অনেকে ঝগড়া-বিবাদের সংকেত মনে করেন। পেঁচা রাতে মাটি কামড়ে নাকি ঝগড়া বাড়িয়ে দিতে চায়। বাস্তবে ইঁদুর শিকারের জন্য রাতে পেঁচা মাটিতে নেমে আসে।
যাত্রাপথে খালি কলস দেখা : বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় যদি সামনে খালি কলস পড়ে বা কেউ খালি কলস নিয়ে গেলে অনেকে যাত্রা বন্ধ রাখেন। কারণ যাত্রাপথের খালি কলস কাজে ব্যর্থ হওয়ার লক্ষণ। আবার অনেকে এটাকে অভাবের আগাম সংকেত হিসেবে ধরে নেন।
পিছন থেকে ডাকা : ঘর থেকে বের হলে পেছন ফিরে তাকানো নিষেধ। তাতে যাত্রা ভঙ্গ হয় বা অশুভ কিছু হয়। আরও বলা হয়, বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় হোঁচট খেয়ে পড়লে যাত্রা অশুভ হয়। বাইরে বের হওয়ার সময় কোনো কিছুতে বাধা পড়লে অনেকে একটু বসে যান। কারণ যাত্রার শুরুতে বাধা পড়লে পথে বিপদ হতে পারে।
হাতের তালু চুলকানো : ডান হাতের তালু চুলকালে টাকা আসবে। আর বাম হাতের তালু চুলকালে বিপদ আসবে।
খাওয়ার সময় ঢেঁকুর উঠা : খাওয়ার সময় যদি কারো ঢেঁকুর আসে বা মাথার তালুতে উঠে যায় তাহলে মনে করা হয় কেউ স্মরণ করছে বা গালি দিচ্ছে। এতে অনেকে খুব বেশি খুশি হন। কারণ দূরে থাকা আপনজন তাকে স্মরণ করছে।
কথার মাঝে টিকটিকি ডাকা : দু’জনে বসে কথা বলার সময় হঠাৎ টিকটিকির আওয়াজকে ‘কথা সত্য’ এমন সাক্ষ্য হিসেবে ধরা হয়। অনেকে এটাকে সত্যের ডাক বলে থাকেন।
রাতে বিশেষ কিছু হস্তান্তর না করা : রাতের বেলা কাউকে সুই-সুতা, টাকা, চুন, হলুদ জাতীয় কিছু না দেওয়ার রেওয়াজ আছে। তাই গেঞ্জি ও গামছা ছিঁড়ে গেলে রাতে সেলাই করেন না অনেকে। রাতের বেলা কাউকে চুন ধার দিলে চুন না বলে দই বলা হয়।
রাতে ঘরের বাইরে পানি না ছোড়া : গ্রামে রাতের খাওয়ার পর হাত ধোয়ার পানি সাধারণত ঘরের বাইরে ছুড়ে ফেলা হয় না। সংস্কার আছে, রাতে এভাবে পানি ফেলা ঠিক না। এতে নাকি অমঙ্গল হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৫ এপ্রিল, ২০১৫/ রোকেয়া।