চিনের চাওইয়াং শহরের ঘটনা। এক বছরের হাংহাং তার মা ইউ লিয়াও-এর সঙ্গে বসে চপস্টিক দিয়ে চাউমিন খাচ্ছিল, বা বলা ভাল, খাওয়ার চেষ্টা করছিল। হঠাৎই ঘুমের ঘোরে তার মাথাটা পড়ে যায় টেবিলে। হাতে ধরা চপস্টিকটি সোজা নাকের ছিদ্র দিয়ে ঢুকে যায়।
তার বাবা-মা তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যান একটি স্থানীয় হাসপাতালে। ডাক্তাররা ধীরেসুস্থে চপস্টিকটি নাক থেকে বের করে আনেন। কিন্তু স্ক্যান না করার ফলে তারা বোঝেননি, চপস্টিকটির যেটুকু নাকের বাইরে থেকে তাঁরা বার করলেন, প্রায় ততটাই রয়ে গিয়েছে একরত্তি হাংহাং-এর নাকের ভিতরেও।
বাড়িতে চলে আসার পরে প্রথম কয়েক দিন সব ঠিকঠাকই ছিল। তার পর বাবা-মা লক্ষ্য করেন, তাদের ছেলের আচার-আচরণে কেমন অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে। যখন-তখন ঘুমিয়ে পড়ে, মুখ দিয়ে লালা গড়ায়, কিছু খাওয়াতে গেলেই বমি করে ফেলে। এই সমস্ত লক্ষণ তো তার মধ্যে আগে ছিল না! বাবা-মা হাংহাংকে আবার নিয়ে যান হাসপাতালে। এ বার তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চিনের নামকরা শেনজিং হাসপাতালে। সেখানে বাচ্চাটির মাথার স্ক্যান করাতেই চোখ কপালে ওঠে ডাক্তারদের। তারা দেখেন, প্রায় ছয় সেন্টিমিটার দীর্ঘ একটি চপস্টিকের টুকরো গেঁথে রয়েছে শিশুটির মস্তিস্কে।
হাসপাতালের ডাক্তার লি শাওই বলেন, এর আগে ডাক্তাররা চপস্টিকের অর্ধেকটা বার করেছিলেন। বাকি অর্ধেকটা নাসাপথে ঢুকে শিশুটির মস্তিস্কে গেঁথে গিয়েছিল। সেই কারণেই বাচ্চাটি অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। অপারেশন ছাড়া, শিশুটিকে সুস্থ করার অন্য কোনও রাস্তা আমাদের সামনে ছিল না।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন, সৌভাগ্যবশত শিশুটির মস্তিস্কের নিষ্ক্রিয় একটি অংশে চপস্টিকটি গেঁথে ছিল। তাই তেমন গুরুতর ক্ষতি হয়নি। কিন্তু তারা এটাও বলেন যে, আর কয়েক দিন ওই চপস্টিক মাথায় গেঁথে থাকলে শিশুটিকে বোধহয় আর বাঁচানো যেত না। অপারেশনের মাধ্যমে তারা চপস্টিকের অবশিষ্ট অংশটি শিশুর মাথা থেকে উদ্ধার করেন।
সেই অপারেশনের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় এক বছর। সুস্থ হওয়ার জন্য অপারেশনের পরেও মাস খানেক হাসপাতালে শুয়ে থাকতে হয়েছিল হাংহাংকে। কিন্তু তার পরে সে সুস্থই রয়েছে। তার বৃদ্ধিতেও কোনও রকম বিঘ্ন ঘটেনি। সব মিলিয়ে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসতে পেরেছে সে। সূত্র : এবেলা
বিডি প্রতিদিন/৩০ জানুয়ারি, ২০১৭/ফারজানা