ছাগলের একটি আবিস্কার মানব সভ্যতার মুখটিকেই বদলে দিয়েছিল। গল্পটা ৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের। ইথিওপিয়ার এক ছাগল পালক কালদি, প্রতিদিনের মতো সেদিনও গেছেন ছাগল চরাতে। ছাগলদের তৃণভূমিতে চরতে দিয়ে দিব্যি নিজের বাঁশিটি বের করে বাজাতে শুরু করেছেন। দুপুরে এক সময়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। বিকেলে জেগে উঠে আবার বাঁশিতে ফুঁ দিলেন ছাগলের পালকে তার কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য। যা বাজিয়ে ছাগলদের একত্র করে গ্রামের পথ ধরতেন।
কিন্তু সেদিন তার সেই বাঁশির সুরে কোন ছাগলই ফিরে এল না। কালদি তাদের খুঁজতে শুরু করলেন। এদিক-ওদিক খুঁজে শেষ পর্যন্ত কালদি দেখলেন, সারাদিন চরে কোথায় ছাগলেরা ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরার জন্য উন্মুখ থাকবে, তা নয়। তারা অতি উৎসাহে লম্ফঝম্প করছে।
কালদি দেখলেন সেই তৃণভূমির ওখানে গাছগুলিতে এক প্রকার ফল রয়েছে। ছাগলেরা মাঝে মাঝেই সেই ফল খাচ্ছে এবং মহাউৎসাহে লম্ফঝম্প করছে। তিনি নিজেও কয়েকটা বেরি খেয়ে দেখলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই কেটে গেল তার ঘুমের জড়তা। কালদি বেশ উৎফুল্ল বোধ করতে লাগলেন। তিনি বুঝলেন, এই ফলই ছাগলদের উৎসাহের উৎস।
বেশ কিছু ফল নিয়ে গ্রামে ফিরে এলেন কালদি। গ্রামবাসীদের সব কথা খুলে বলার পরে সেই ফলকে ফুটিয়ে তারা একটা পানীয় তৈরি করে পান করলেন। এতে তারা আরো চাঙ্গা ভাব অনুভব করলেন।
ছাগলদের আবিষ্কার করা সেই ফল আসলে কফি-ফল। ছাগলেরা নেহাত খেলাচ্ছলেই আবিষ্কার করেছিল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়। মানুষ সেকথা তেমন মনে রাখেনি। কিন্তু এই কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে ইথিওপিয়ার মৌখিক পরম্পরায়।