নতুন এক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, বহু প্রতীক্ষিত ডেড সি স্ক্রলস বা মৃত সাগরের পাণ্ডুলিপিগুলোর অনেকগুলোই আগে ধারণা করা সময়ের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ বছর পুরোনো। গবেষকরা বলছেন, এসব স্ক্রলস প্রায় ২৩০০ বছর আগের, অর্থাৎ এগুলো লেখকদের জীবনকালেই রচিত হয়েছিল।
নেদারল্যান্ডসের গ্রোনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম্লাডেন পপোভিচের নেতৃত্বে গবেষক দলটি রেডিওকার্বন পদ্ধতি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) একসঙ্গে ব্যবহার করে এই নতুন তথ্য উদঘাটন করে। ‘এনক’ নামের একটি এই মডেল তারা তৈরি করেছেন, যা পাণ্ডুলিপির ছবি দেখে প্রায় ৮৫ শতাংশ সঠিকভাবে তার বয়স অনুমান করতে পারে।
১৯৪৭ সালে ইসরায়েলের পশ্চিমতীরে খিরবত কুমরান এলাকার ১১টি গুহায় প্রথম এই স্ক্রলসের খোঁজ পান কিছু বেদুইন রাখাল। পরে প্রত্নতত্ত্ববিদরা হাজার হাজার টুকরো উদ্ধার করেন, যার মধ্যে প্রায় ২০০টি হিব্রু বাইবেলের প্রাচীনতম কপি বলে ধরা হয়।
পপোভিচ জানান, এই স্ক্রলসগুলো শুধু ধর্মীয় নয়, সাংস্কৃতিকভাবেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এগুলো আমাদের জানায়, সেই সময় মানুষ কী ভাবত, লিখত এবং বিশ্বাস করত। একটি স্ক্রলের মাধ্যমে বই অফ ড্যানিয়েলের একটি অংশের বয়স দ্বিতীয় শতাব্দী খ্রিষ্টপূর্ব ভাবা হলেও, এখন দেখা যাচ্ছে সেটি আরও পুরোনো—সম্ভবত লেখকের জীবনকালেই লেখা।
আগের গবেষণায় ব্যবহৃত রেডিওকার্বন পদ্ধতির একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো এতে নমুনা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এআই দিয়ে বয়স নির্ধারণে কোনো ধ্বংস হয় না, ফলে ভবিষ্যতে এটি আরও কার্যকর হতে পারে বলে আশা করছেন গবেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা শুধু প্রাচীন ইতিহাসকে নতুনভাবে বুঝতে সহায়তা করছে না, বরং প্রাচীন পাণ্ডুলিপি বিশ্লেষণের ভবিষ্যৎ পথও খুলে দিচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল