ইউরোপজুড়ে মোবাইল ফোন চুরির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটছে যুক্তরাজ্যে। মার্কিন বীমা কোম্পানি স্কয়ারট্রেডের জরিপে উঠে এসেছে, ইউরোপের বারোটি দেশের মধ্যে মোবাইল ফোন চুরির ৩৯ শতাংশই ঘটছে ব্রিটেনে। টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের জুন থেকে যুক্তরাজ্যে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ ৪২৫ শতাংশ বেড়েছে। শুধু লন্ডনেই ঘটেছে এসব ঘটনার ৪২ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চুরির ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে বার্মিংহামে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রীষ্মের ছুটি, বড়দিনসহ উৎসবের মৌসুমে ফোন চুরির ঘটনা অনেক বেশি ঘটে। বিশেষ করে পর্যটক, উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত মানুষ ও মৌসুমি কেনাকাটায় অংশ নেওয়া জনগোষ্ঠী এসব অপরাধের শিকার হচ্ছেন বেশি। এই তথ্য মিলছে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যানের সঙ্গেও। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পকেটমারি এবং অনুরূপ অপরাধ বেড়েছে ৫০ শতাংশ, যার মধ্যে মোবাইল ফোন চুরি সবচেয়ে বেশি। ওই সময় পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৮৩ হাজার চুরির অভিযোগ রেকর্ড করা হয়েছে।
এ বছরের শুরুতে ‘কম্পেয়ার দ্য মার্কেট’-এর আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে লন্ডনে ৭০ হাজারেরও বেশি ফোন চুরি হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে চুরি হচ্ছে গড়ে ১ হাজার ৩৪৯টি ফোন। এতে লন্ডনবাসীর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭০ মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছাতে পারে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্য বলছে, লন্ডনে মোবাইল ফোন চুরির প্রায় ৪০ শতাংশই ঘটে ওয়েস্টমিনস্টার এবং ওয়েস্ট এন্ড এলাকায়। পুলিশের মতে, সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র ফোন চুরি ও বিক্রিকে একটি ‘৫০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের শিল্পে’ পরিণত করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাজ্যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগ এই অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে তুলেছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লক্ষ লক্ষ ব্রিটিশ নাগরিক কম বেতনে জীবনযাপন করছেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছেন না।
এছাড়া, চুরি ও গ্যাং কার্যকলাপ বৃদ্ধির সঙ্গে অবৈধ অভিবাসনের সংযোগও তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরাধ দমন ও জনসচেতনতা বাড়াতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে। সূত্র : টাইমস ও দ্য গার্ডিয়ান।
বিডি-প্রতিদিন/শআ