নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, শিশুদের মস্তিষ্ক চার মাস বয়স থেকেই স্মৃতি গঠন করতে পারে। তবে বড় হয়ে তারা সেসব স্মৃতি মনে রাখতে পারে না—এই রহস্য এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।
গবেষণাটি চালানো হয় ২৬ জন শিশুর ওপর, যাদের বয়স ৪ মাস থেকে ২৪ মাসের মধ্যে। গবেষকরা ‘এফএমআরআই’ (fMRI - মস্তিষ্কের ছবি ধারণের একটি পদ্ধতি) ব্যবহার করে দেখতে পান, ছবি দেখানোর সময় শিশুদের মস্তিষ্কের ‘হিপোক্যাম্পাস’ (মস্তিষ্কের যে অংশ আবেগ ও স্মৃতি সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত) সক্রিয় হয়।
শিশুদের বিভিন্ন মুখ, বস্তু ও দৃশ্যের ছবি একবার করে দেখানো হয়। পরে একই ধরনের পরিচিত ও নতুন ছবি একসঙ্গে দেখিয়ে লক্ষ্য করা হয় তারা কোনদিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। যদি কোনো শিশু পূর্বে দেখা ছবির দিকে বেশি সময় তাকায়, তাহলে ধরে নেওয়া হয় সে ছবিটি তার মনে আছে।
গবেষণায় দেখা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে (বিশেষ করে ১২-২৪ মাস বয়সে) শিশুদের মস্তিষ্কের ‘অরবিটোফ্রন্টাল কর্টেক্স’ (যা স্মৃতি চেনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভূমিকা রাখে) আরও বেশি সক্রিয় হয়।
এই ফলাফল থেকে বোঝা যায়, শিশুদের সংক্ষিপ্ত অভিজ্ঞতা থেকেও স্মৃতি তৈরি হয়। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই স্মৃতিগুলো কতদিন থাকে এবং কেন মানুষ ৪-৫ বছর বয়সের আগের স্মৃতিগুলো মনে রাখতে পারে না?
গবেষকরা মনে করছেন, এই বিষয়ে আরও গবেষণা করলে শিশুর ভাষা শেখা, বিকাশজনিত সমস্যা, এমনকি বার্ধক্যে স্মৃতি হারানো ও আলঝেইমার রোগের কারণ বুঝতেও সহায়তা করা যেতে পারে।
গবেষণাটির নেতৃত্ব দেন অধ্যাপক নিক টার্ক-ব্রাউন। তিনি বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি শিশুরা সংক্ষিপ্ত অভিজ্ঞতা থেকেও স্মৃতি তৈরি করতে পারে। তবে বড় হওয়ার পর সেই স্মৃতি মস্তিষ্কে থাকলেও তা মনে পড়ে না।
এই গবেষণায় মানুষের স্মৃতি গঠনের প্রাথমিক ধাপ ও তার ভবিষ্যৎ প্রভাব সম্পর্কে আরও জানার দরজা খুলে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল