বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় খাত কৃষিজাত শিল্প

মাহবুবুল হক চিশতি, চেয়ারম্যান, নির্বাহী কমিটি, ফার্মার্স ব্যাংক

আলী রিয়াজ

সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় খাত কৃষিজাত শিল্প

নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফার্মার্স ব্যাংক অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে। এই চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা গত বছর মুনাফা করেছি। গ্রাহকদের কাছে আস্থা তৈরি করতে পেরেছি। আশা করি আগামী তিন বছরের মধ্যে একটি আস্থাশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফার্মার্স ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হবে।  বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে এমনটাই বললেন ফার্মার্স ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক চিশতি (বাবুল চিশতি)। এছাড়া বিনিয়োগ,  ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা, ব্যাংকিংসহ নানা বিষয়ে জানালেন তার পরিকল্পনা। ১৯৮২ সালে ঠিকাদারি ব্যবসা থেকে শুরু করে এখন তিনি গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার, মত্স্য খামার, জুতার কারখানা, জুট মিল, ট্যুরিজমসহ বিভিন্ন খাত। নিজের মেধা ও সততা দিয়ে আজ দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজেকে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বাবুল চিশতি ফার্মার্স ব্যাংকের কার্যক্রম নিয়ে বলেন, ফার্মার্স ব্যাংক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা এসএমই, অ্যাগ্রোবেজ শিল্প, জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ করেছি। দেশের বর্তমানের সবচেয়ে উদীয়মান শিল্প হিসেবে এসব খাত উঠে এসেছে। ফলে ঋণের আদায় হার প্রায় শতভাগ। এই চার বছরে আমাদের কোনো খেলাপি নেই।

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর সব ধরনের আধুনিক প্রোডাক্ট ফার্মার্স ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য এনেছে। আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ফার্মার্স ব্যাংক বিশেষ অফার দিচ্ছে। এ কারণে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা এখন প্রায় ৪৪ হাজার। প্রতিদিনই এটা বাড়ছে। আমাদের ৩৮টি শাখায় কোনো লোকসানি শাখা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের সব নিয়মকানুন পরিপালনে আমরা শতভাগ সচেষ্ট থাকি। আমানতকারীদের মধ্যে এখনো আস্থাহীনতা পুরোপুরি কাটেনি। আমানতের ঝুঁকি নিয়ে শতভাগ শঙ্কা কাটিয়ে আমরা নতুন প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে ফার্মার্স ব্যাংকের কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে। চলতি বছর আমরা দশমিক ৬ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছি। আগামী বছর আশা করি ৪ শতাংশের বেশি ডিভিডেন্ড দেওয়া সম্ভব হবে। বিনিয়োগ পরিবেশ সম্বন্ধে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় সম্ভাবনাময় খাত কৃষিজাত শিল্প। এই শিল্পের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান করা সম্ভব। আমাদের ব্যাংক কৃষিজাত শিল্পের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আমাদের প্রদান করা ঋণের একটি বড় অংশ কৃষিজাত শিল্পে। আমার নিজের বৃহত্ কৃষি খামার রয়েছে। সেখানে মাছ, পোলট্রি, গরু মোটাতাজারকরণ, দুগ্ধ উত্পাদন করছি। জামালপুরের বকসীগঞ্জে এই প্রতিষ্ঠানের শতাধিক ব্যক্তির কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আরেকটি সম্ভাবনাময় খাত পাট শিল্প। সরকার এই শিল্পের প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছে, এটা আমাদের দেশের জন্য বড় পদক্ষেপ। সরকার যদি পাটজাত পণ্য ব্যবহার নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি রাখে তাহলে বৃহত্তম আয় করা সম্ভব। আমাদের পাটের হারানো গৌরব আবার ফিরবে বলে আমি মনে করি।

দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, এখন বিনিয়োগের চমত্কার পরিবেশ রয়েছে। রাষ্ট্র, প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। এই অর্থ বিনিয়োগের এখন সুবর্ণ সময়। আমি মনে করি বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ এত ভালো আর কখনো ছিল না।

তিনি আরও বলেন, শুধু নিজের ব্যবসা নিয়ে ভাবিনি। নিজের এলাকার মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে আমার সব শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজ উপজেলা বকসীগঞ্জে করেছি। সেখানকার মানুষ অত্যন্ত দরিদ্র। তাদের দুর্দশার কথা চিন্তা করেই ঢাকার বাইরে শিল্প-কারখানা স্থাপন করেছি।

সর্বশেষ খবর