দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের ৪৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৪ শতাংশ প্রার্থীই কোটিপতি- এ এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের ৪৮ জন প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করে সুজন এ এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সুজনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজনের সহ-সমন্বয়কারী সানজিদা হক। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের ৫০ জন প্রার্থীর মধ্যে দু'জনের প্রার্থিতা খেলাপির কারণে বাতিল হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা বাকি ৪৮ জন প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সুজন। এর ভিত্তিতে সুজন বলছে, ৪৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৪ শতাংশ কোটিপতি। তাদের নিজ ও নির্ভরশীলদের নামে ন্যূনতম এক কোটি টাকার ওপরে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
সুজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে ক্ষেত্রে প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ আছে, কিন্তু মূল্য উল্লেখ নেই, সেগুলো এই বিশ্লেষণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ঘোষিত-অঘোষিত সম্পদের বর্তমান মূল্য হিসাব করলে কোটিপতিদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সুজনের দাবি, সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের ৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০ জন কোটিপতি। পাঁচ কোটি টাকার ওপরে সম্পদ রয়েছে একজনের। তিনি নীলুফার জাফর উল্যাহ। তার নিজের ও নির্ভরশীলদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩৬ কোটি ৪২ লাখ ৮১ হাজার ৬৭১ টাকা।
জাতীয় পার্টির মাহজাবিন মোরশেদের পাঁচ কোটি টাকার ওপরে সম্পদ রয়েছে। তিনি ও তার নির্ভরশীলদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১৯ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার ৪৪৪ টাকা।
সংরক্ষিত নারী আসনের ৪৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ছয়জন ঋণগ্রহীতা।
সুজনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে এবারও পরিবারতন্ত্রের প্রভাব লক্ষণীয়। আওয়ামী লীগ যে ৩৯টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছে, তার কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ আত্মীয়তার সূত্রে মনোনয়ন পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত নয়জন রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না।
সুজনের বিশ্লেষণে দাবি করা হয়েছে, নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন এমন নয়জন এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। এই নয়জনের গড় আয় বেড়েছে ১৫১ শতাংশ। আয় বাড়ার হার সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের সানজিদা খানমের। তার আয় বেড়েছে এক হাজার ৫৩৯ শতাংশ।
নীলুফার জাফর উল্যাহর আয় বেড়েছে এক হাজার ২৩৩ শতাংশ। ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পীর বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম তারানা হালিম। তার আয় গতবারের তুলনায় ২২ শতাংশ কমেছে।
সুজনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে জাতীয় সংসদে যেভাবে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন হচ্ছে, তাতে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।