শিরোনাম
- ছুটির দিনে বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা
- ইউটিউবে ব্যান্ড বে অব বেঙ্গলের 'পুতুল’
- ইনজুরিতে ছিটকে গেলেন ম্যাক্সওয়েল, শেষ এবারের আইপিএল
- হ্যাট্রিক করলেন চাহাল, এক ওভারেই নিলেন ৪ উইকেট
- চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সা-ইন্টারের রোমাঞ্চকর ড্র
- জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে মে দিবসের অঙ্গীকার : শিমুল বিশ্বাস
- লিবিয়া থেকে কাল দেশে ফিরছেন ১৭৭ বাংলাদেশি
- চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
- প্রাক-প্রাথমিকে ১৫০০ বিদ্যালয়ে স্মার্ট টিভি-ল্যাপটপ দেবে সরকার
- জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ
- দাবানলে জ্বলছে ইসরায়েল, হন্য হয়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
- দেশব্যাপী শব্দদূষণবিরোধী অভিযানে ২৬৫ হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ
- তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
- পুঁজিবাজারে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে
- গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, হাসপাতালে ভর্তি ২৯
- দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার
- মুহুর্মুহু রকেট হামলায় বিপর্যস্ত মার্কিন রণতরী, বাধ্য হলো পিছু হটতে
- ছাত্রলীগের নির্যাতনের সহযোগী শিক্ষক-কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
- মিরাজের ঘূর্ণিতে তিনদিনেই জিতল বাংলাদেশ
\\\'নিজেদের স্বার্থেই সম্পর্ক উন্নয়ন জরুরি\\\'
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অনলাইন ভার্সন

ভারত-বাংলাদেশের নিজেদের স্বার্থেই সম্পর্ক ভাল রাখা উচিত। যদি প্রতিবেশী দুটি দেশ হয়ে আমরা সম্পর্ক ভাল রাখতে না পারি, তাহলে দেখা যাবে একসময় আঞ্চলিক সমস্যাগুলো আমাদের প্রভাবিত করবে। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করেছে, তাতে ভারতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদেরকে বাংলাদেশের সঙ্গে অবশ্যই ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। দুই দেশের ন্যায্য অধিকারভিত্তিক চুক্তিগুলো সম্পন্ন হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে ভারত সরকারকে আন্তরিকতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ সরকার তিস্তা চুক্তির জন্য ভারতের কোনো প্রদেশের নেতার সঙ্গে আলোচনা করেনি, বাংলাদেশের সরকার আলোচনা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। কিন্তু, বাংলাদেশ সরকার যেটা খুবই সফলতার সঙ্গে করেছে, ভারত সেখানে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
শনিবার গুলশানের হোটেল লেকশোর হোটেলে ভারত নির্বাচন-২০১৪: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সামিয়া জামান।
মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন উপমহাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার। আর প্রধানমন্ত্রী হলেও তা বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকির কারণ হবে না বলেও জানান তিনি।
যুক্তি হিসেবে কুলদীপ নায়ার বলেন, ভারতে সংবিধানে সবার ওপরে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র একক কারো বিষয় নয়, এটা সকলের বিষয়। গণতন্ত্র মানে বহুতন্ত্রবাদ। তাই এক মোদি চাইলেই সব কিছু হবে না। রয়েছে সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের শক্ত অবস্থান। তিনি বলেন, মোদি ক্ষমতায় গেলেই বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠাতে পারবে না। কারণ বাংলাদেশের যে মানুষেরা ভারতে থাকে তারা ভারতকে ধারণ করে। তিনি বলেন, মোদিকে বুঝতে হবে ভারতে ১৮০ মিলিয়নের মতো মুসলমান রয়েছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জগগোষ্ঠীকে তিনি উপেক্ষা করতে পারেন না। তারা যেটা চায় না, মোদি সেটা করতে পারেন না।
কুলদীপ নায়ারের মতে, এবারের নির্বাচনে এতো সহজে ভারতে সরকার গঠন করতে পারছেন না মোদি। কারণ লোকসভার ৫৪৩ আসনের ২৭৩টি এককভাবে পাওয়া সম্ভব হবে না তার দলের জন্যে। এ ক্ষেত্রে জোটের শরণাপন্ন হতেই হবে। তিনি বলেন, ভারতে এ নির্বাচনে ধর্মনিরপেক্ষতা বা সেক্যুলারিজম একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুজরাট দাঙ্গায় ৩ হাজারের মতো মুসলিম মারা গেলেও এ বিষয়ে মোদীর কোনো মন্তব্য না দেওয়ারও নিন্দা জানান কুলদীপ নায়ার।
তিনি বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশকে চাইলেও অনেক কিছু দিতে পারেননি। এ সময় তিস্তা ও ফারাক্কা বাঁধ সমস্যার সমাধানের সুযোগ ছিল। মনমোহন বেশ কিছু ফর্মুলা নিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশে। কিন্তু মমতার কারণে তিস্তার সমাধান হয়নি। তিস্তা সমস্যার অবশ্যই সমাধান করা উচিত।
তিনি ইউরোপের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ‘অভিন্ন বাজার’ বা ‘কমন মার্কেট’ চালু করা প্রয়োজন বলে মত দেন।
সুশাসনের জন্য দক্ষিণ এশিয়াকে অসমপ্রদায়িক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্ম ব্যক্তিগত বা প্রাইভেট বিষয়। প্রথমে আমি বাংলাদেশি বা ভারতীয়। তারপরের পরিচয় আমি হিন্দু বা মুসলিম।
ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশের নিজেদের স্বার্থেই সম্পর্ক ভাল রাখা উচিত। তিনি বলেন, যদি প্রতিবেশী দুটি দেশ হয়ে আমরা সম্পর্ক ভাল রাখতে না পারি, তাহলে দেখা যাবে একসময় আঞ্চলিক সমস্যাগুলো আমাদের প্রভাবিত করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকতে পারি তাহলে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের মতো সমস্যা আমাদের মোকাবেলা করা কঠিন হবে। কিন্তু যদি আমরা একসাথে কাজ করি তাহলে তা দু’দেশের জন্যই ভাল হবে বলে মনে করেন এই প্রবীন আইনজীবী।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি বলেন, “ভারতে এখন নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। যেই ক্ষমতার আসুক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। ১৯৯২ সালে যখন খালেজা জিয়া ভারতে এসেছিলেন তখনও ভারতে অবস্থানকারী ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিদের প্রসঙ্গটি আলোচিত হয়েছিল। আলোচনার মধ্য দিয়ে এ বিষয়ে সন্তোষজনক সমাধানে আসা সম্ভব।”
ঢাকাস্থ সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দেব মুখার্জি বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের একটা দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। গণতান্ত্রিক দেশের নিয়মেই হচ্ছে সরকার বদলাবে। ফলে ভারতের এই লোকসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার গঠন হলে রাতারাতি সেই সম্পর্ক পাল্টে যাবে এটা মনে হয় না। দুই দেশের মানুষই আমরা একে-অপরের ব্যাপরে উত্সুক। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পর দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিরাট উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে, ভারত সন্ত্রাস দমনে বেশ ভালো সহায়তা পেয়েছে। তিনি বলেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। সীমান্তের ছিটমহলে যেসব মানুষ বাস করে তাদের সম্পর্কে আমাদের দুই দেশকেই ভাবতে হবে।
ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষাল বলেন, ভারতে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদী যে মন্তব্য করেছেন সেই ইস্যুটিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। তিনি বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করেছে, তাতে ভারতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদেরকে বাংলাদেশের সঙ্গে অবশ্যই ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। কূটনীতির একটি নিজস্ব গতিধারা আছে। কূটনৈতিক দাবি মেনেই ভাল সম্পর্ক করতে হবে আমাদের। জয়ন্ত ঘোষাল বলেন, এখানে মোদীর দেওয়া বক্তব্যের জের ধরে অনুপ্রবেশ নিয়ে কথা হয়েছে। আমি আমার অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, এক্ষেত্রে খুবই মানবিক আচরণ করতে হবে। মোদির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি মনে করি, এটা বাঙালিদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, তিস্তার পানি চুক্তি না হওয়া বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কে ভারতের দিক থেকে একটা চরম খারাপ নজির। তিনি বলেন, ‘‘গত ৪২ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক ধরণের উত্থান-পতন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হাসিনা ভারত সফর করে যে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছিলেন তা অভূতপূর্ব। বাংলাদেশ এটা আন্তরিকভাবে করেছিলো। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের কতগুলো সূচকে উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ভারত কী করছে? ঠিক তার বিপরীত আচরণ করেছে। তিস্তার পানি চুক্তি না হওয়া তার একটা চরম খারাপ নজির। এটা মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশ সরকার এ চুক্তির জন্য ভারতের কোনো প্রদেশের নেতার সঙ্গে আলোচনা করেনি, বাংলাদেশের সরকার আলোচনা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বা হাসিনা সরকার যেটা খুবই সফলতার সঙ্গে করেছে, ভারত সেখানে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
এর আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক এফিবিসিসিআই সভাপতি আনিসুল হক। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের মধ্যে অনেক বড় ধরনের বাণিজ্য বৈষম্য ঘাটতি আছে। তবু ভারতকে আমরা যে আগ্রহ নিয়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম ভারত কী তা দিয়েছে? ভারতের স্বার্থেই বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্ক রাখতে হবে। কারণ ভারতের নিজেদেরই অনেক সমস্যা রয়েছে।
এর আগে ভারতের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল (অব.) দীপঙ্কর ব্যানার্জী বলেন, ভারতবর্ষে এই নির্বাচন নানা কারণেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি ধারণা করছি, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি নতুন সরকার গঠনের সম্ভাবনা ব্যাপক। নেতারা তাদের মতো করে ভোটারদের কাছে বার্তা দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অনেকগুলো ইস্যু আছে যা নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে কাজ করতে হবে। এরমধ্যে অন্যতম প্রধান ইস্যু হচ্ছে, পানিসম্পদ, জনসম্পদ, উন্নয়ন, সীমান্ত সমস্যা, কানেকটিভির মতো বিষয়।
সলিমুল্লাহ খান বলেন, বলা হচ্ছে, ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপি এবার ক্ষমতায় আসতে পারে। এবারই প্রথম তারা ক্ষমতায় আসছে না। এর আগেও তারা ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু একটি দল ক্ষমতায় আসলেই তারা যা খুশী তাই করতে পারে না। যেমন, এর আগে যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন বিজেপি বলেছিলো তারা সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দিবে। কাশ্মীরের সম্পত্তি সম্পর্কিত এই ধারাটি কিন্তু তারা বাতিল করতে পারেনি। তিনি বলেন, যদি আমরা একটু পিছনের দিকে ফিরে তাকাই তাহলে দেখবো, ১৯৪৭ সালে এই বহুজাতিক ভূখণ্ডকে ভাগ করে বলা হলো-দ্বিজাতি তত্ত্ব। অর্থাত্ এখানে মাত্র দুটি জাতি আছে। সামপ্রদায়িকতা দুই দেশেই আছে। দুই দেশের বিভিন্ন দলের মধ্যেও আছে। যেমন, কংগ্রেস যখন বলে, ২০০২ সালে বিজেপির নেতৃত্বে গুজরাটে দাঙ্গা হয়েছে, ঠিক তার পাল্টা অভিযোগে বিজেপিও বলে, ১৯৮৪ সালে কংগ্রেস শিখ হত্যা করেছে। কিন্তু মোদী যে বলেছেন, তারা ক্ষমতায় আসলে অবৈধ বাংলাদেশিদের সেখান থেকে বের করে দেবে সেটা অনেক বড় আশঙ্কার বিষয়।
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে কৃষিখাত থেকে আলাদা করে সুবিধাবঞ্চিত করা হয়েছে’
২ ঘণ্টা আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

'উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি নির্মিত হলেই শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে'
৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়