ভেজাল প্যারাসিটামল তৈরির দায়ে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিসিআই বাংলাদেশের পরিচালক, ব্যবস্থাপকসহ ছয়জনকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক। জরিমানার টাকা দিতে না পারলে তাদের আরও ছয় মাসের জেল খাটতে হবে। আজ সোমবার ঢাকার ড্রাগ আদালতের বিচারক এম আতোয়ার রহমান ২৩ বছর আগে দায়ের করা এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন বিসিআই বাংলাদেশের পরিচালক মো. শাহজাহান সরকার, শামসুল হক, নুরুন নাহার বেগম, উত্পাদন ব্যবস্থাপক এম তাজুল হক, মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক আয়েশা খাতুন ও নির্বাহী পরিচালক এ এস এম বদরুদ্দোজা। তাদের মধ্যে জামিনে থাকা শাহজাহানই কেবল রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি পাঁচ আসামি মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, প্যারাসিটামল সিরাপে বিষাক্ত উপাদান থাকায় ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে বহু শিশু কিডনি সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়। বিষয়টি উদঘাটিত হওয়ার পর বিসিআইয়ের উৎপাদিত প্যারসিটনসহ পাঁচ কোম্পানির তৈরি প্যারাসিটামল সিরাপে ক্ষতিকর ডাই-ইথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
এরপর ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তখনকার পরিদর্শক আবুল খায়ের চৌধুরী ১৯৯২ সালের ১৮ নভেম্বর দুটি ধারায় বিসিআই বাংলাদেশের ছয়জনকে আসামি করে এ মামলা করেন।
১৯৯৪ সালের ২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও অভিযুক্ত চার কোম্পানির আবেদনে উচ্চ আদালত মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। সেই স্থগিতাদেশ ২০১১ সালে ওঠার পর শেষ পর্যন্ত বিসিআইয়ের মামলার শুনানি আবার শুরু হয় গত বছর ৭ অাগস্ট।
এ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নাদিম মিয়া জানান, রাষ্ট্রপক্ষে তিনজনের সাক্ষ্য শুনে আদালত এই রায় ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ আইনে এ অপরাধের জন্য ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডই সর্বোচ্চ সাজা বলে আসামি শাজাহানের আইনজীবী খন্দকার বশির আহমেদ জানান।
ভেজাল প্যারাসিটামল তৈরির দায়ে এর আগে অ্যাডফ্লেম ফার্মাসিউটিক্যালসের অন্যতম মালিক, ব্যবস্থাপকসহ তিনজনকে গতবছর দশ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ আগস্ট ২০১৫/শরীফ